রাশিয়ায় রপ্তানি সীমিত, পুরোনো গাড়ির দাম কমেছে জাপানে

রাশিয়ার কাছে ব্যবহৃত বা পুরোনো গাড়ি বিক্রয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে জাপান। গত আগস্টে রাশিয়াতে সাব কমপ্যাক্ট (ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি) গাড়ি ছাড়া সব ধরনের গাড়ি রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে জাপান।

রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সে দেশে জাপানের পুরোনো গাড়ির ব্যবসা বেড়েছিল। ২০২২ সালে জাপান রাশিয়ায় ২০০ কোটি ডলারের পুরোনো গাড়ি বিক্রি করেছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, জাপান থেকে মূলত অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে রাশিয়ায় টয়োটা, হোন্ডা ও নিশানের মতো গাড়ি রপ্তানি হতো। দেশটির ফুশিকি বন্দরের মতো ছোট বন্দর দিয়ে এসব জাপানি গাড়ি রাশিয়ায় রপ্তানি হতো। এই বন্দর রাশিয়ার কাছাকাছি হওয়ায় সেখান থেকে রাশিয়ায় গাড়ি রপ্তানি করা সহজ।

রাশিয়া যেসব দেশ থেকে ব্যবহৃত বা পুরোনো গাড়ি আমদানি করে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করে জাপান থেকে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে জাপানে পুরোনো গাড়ির দাম কমেছে। এসব গাড়ির বিক্রেতারাও এখন নতুন বাজার খুঁজছে, বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার মতো দেশে।

ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর পশ্চিমা অনেক গাড়ি কোম্পানি ও এমনকি জাপানের টয়োটা রাশিয়ায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এরপর মূলত দেশটিতে জাপানের পুরোনো গাড়ি ব্যবসা বাড়ে।

গত বছর রাশিয়ার ওপর বিভিন্নভাবে নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়া সত্ত্বেও তারা জাপানের পুরোনো গাড়ির এক-চতুর্থাংশের বেশি কিনেছে। গড়ে এসব গাড়ির দাম ছিল ৮ হাজার ২০০ ডলার। অথচ ২০২০ সালেই এসব গাড়ির গড় দাম ছিল এর অর্ধেক। সে সময় রাশিয়া জাপানের পুরোনো গাড়ির ১৫ শতাংশের মতো কিনত।

চলতি ২০২৩ সালেও রাশিয়া বিপুল পরিমাণে পুরোনো জাপানি গাড়ি কিনেছে—ইতিমধ্যে ১৯০ কোটি ডলারের গাড়ি কেনাবেচা হয়েছে।

রাশিয়ার তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা অটোস্ট্যাট জানিয়েছে, বছরের প্রথম আট মাসে রাশিয়া যে তিন লাখ তিন হাজার পুরোনো গাড়ি আমদানি করেছে, তার অর্ধেকের বেশি জাপান থেকে কেনা। এই সময় সে দেশে ৬ লাখ ৬ হাজার ৯৫০টি নতুন গাড়ি বিক্রি হয়েছে, যেগুলো মূলত চীনা ও রুশ ব্র্যান্ডের।

জাপানের টোয়ামাভিত্তিক এস ভি অ্যালায়েন্স দুই বছর ধরে পুরোনো গাড়ির ব্যবসায় আছে। এ সময় তারা রাশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পুরোনো গাড়ি রপ্তানি করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রতি মাসে তারা ফুশিকি বন্দর দিয়ে গড়ে ৬ হাজার ৫০০ গাড়ি রপ্তানি করেছে। এই বন্দর রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে, পণ্যবাহী জাহাজের সেখানে যেতে দুই দিন সময় লাগে।

এস ভি অ্যালায়েন্সের কর্মকর্তা ওলেসা আলিকসিভা রয়টার্সকে বলেছেন, ব্যবসা ৭০ শতাংশ কমে গেছে, তাই বেশ কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করতে হয়েছে।