নতুন চিপের স্মার্টফোনে বাজিমাত করেছে চীনের হুয়াওয়ে

হুয়াওয়ে লোগো
ছবি: রয়টার্স

হুয়াওয়ে টেকনোলজিস ও চীনের শীর্ষ চিপ কোম্পানি এসএমআইসি যৌথভাবে উন্নত মানের সাত ন্যানোমিটারের একটি প্রসেসর নিয়ে এসেছে। সেই প্রসেসর দিয়ে যে স্মার্টফোন বানানো হয়েছে, তা রীতিমতো বাজিমাত করে দিয়েছে।

নতুন এই স্মার্টফোনের নাম মেট ৬০ প্রো, যা বানানো হয়েছে চীনে তৈরি নতুন কিরিন ৯০০০ এস চিপ দিয়ে। টেকইনসাইটস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা প্রতিবেদনটির একটি কপি রয়টার্সকেও দিয়েছে।

হুয়াওয়ে গত সপ্তাহে মেট ৬০ প্রো মডেলের ফোন বিক্রি শুরু করে। এই ফোন দিয়ে স্যাটেলাইট কলও করা যাবে, যদিও ভেতরের চিপসেটের শক্তিমত্তা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

এই ফোনের প্রসেসর প্রথমবারের মতো উন্নত মানের সাত ন্যানোমিটারের প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি। রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, চীন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নিজেরাই চিপের ইকোসিস্টেম তৈরিতে অনেকটা এগিয়ে গেছে।

তবে এ বিষয়ে হুয়াওয়ে বা এসএমআইসি রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলতে চায়নি।

তবে এ ফোন বাজারে আসার পর ক্রেতাদের মধ্যে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। রোববার ফোনটি বাজারে আসার পর এক মিনিটের মধ্যে অনলাইনে সব কটি বিক্রি হয়ে যায়। ফলে হুয়াওয়ে এখন ১৫ থেকে ১৭ মিলিয়ন বা দেড় কোটি থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ ফোনসেট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে। তবে ১০ সেপ্টেম্বরের আগে এই ফোন চীনের বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস।

ক্রেতারা জানিয়েছেন, এ ফোনের ডাউনলোডের গতি শীর্ষ মানের ফাইভ–জি ফোনের সমান। এদিকে যে সময় ফোনটি বাজারে ছাড়া হয়েছে, ঠিক সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমোনডো চীন সফর করেন। অনেকেই মনে করছেন, বিষয়টা নিতান্ত কাকতালীয় নয়।

২০১৯ সালে জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়ের কাছে চিপ তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ বিক্রি বন্ধ করে দেয়। শুধু তারাই নয়, একপর্যায়ে সব পশ্চিমা দেশ হুয়াওয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। গুগল বন্ধ করে দেয় অ্যান্ড্রয়েড সেবা। হুয়াওয়ের হাতে যেসব পুরোনো চিপ ছিল, সেগুলো দিয়েই তারা একসময় ফাইভ–জি ফোন তৈরি করেছে। ফলে তাদের স্মার্টফোন বিক্রি অনেকটা কমে যায়।

এরপর ২০২২ সালেই হুয়াওয়ে নিজেদের অপারেটিং সিস্টেম হারমনি দিয়ে স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসে। মেট ৬০ প্রো তাদের ফ্ল্যাগশিপ মডেল।

এ প্রসঙ্গে টেকইনসাইটের বিশ্লেষক ড্যান হাচিনসন রয়টার্সকে বলেন, এই স্মার্টফোন যুক্তরাষ্ট্রের গালে চপেটাঘাতের শামিল। তিনি আরও বলেন, এই যে রাইমোনডোর সফরের সময়েই এ ফোন বাজারে এল, এটা কার্যত যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো—‘দেখো, তোমাকে আমাদের দরকার নেই। আমরা নিজেরাই সব করতে পারি’।