চীনে তৈরি গাড়িতে শুল্ক আরও বাড়াতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চীনে তৈরি যানবাহন আমদানিতে শুল্কহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। সেই সঙ্গে চীনের পণ্য যেন মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এই আইনপ্রণেতাদের মধ্যে যেমন রিপাবলিকান দলের সদস্যরা আছেন, তেমনি ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরাও আছেন। তাঁদের পরামর্শ, চীনের যানবাহন আমদানিতে বর্তমানে যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আছে, তার হার বৃদ্ধি করা হোক।

এই বিষয়ে আইনপ্রণেতারা যে চিঠি লিখেছেন, তা রয়টার্সের হাতে এসেছে। সেখানে তাঁরা বলেছেন, চীনের যানবাহনে যে শুল্ক আছে, তা কেবল বজায় রাখলেই চলবে না; বরং তার হার আরও বাড়াতে হবে।

তবে এ বিষয়ে রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রে চীনের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও জবাব পায়নি। ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে যে শুল্ক আরোপ করে, তার অংশ হিসেবে যানবাহন আমদানিতেও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। পরবর্তী সময়ে জো বাইডেন প্রশাসনও সেই শুল্কের ধারা অব্যাহত রাখে।

চিঠিতে আইনপ্রণেতারা আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) যেন ৩০১ নম্বর ধারার অধীনে চীনের যানবাহন নিয়ে নতুন তদন্ত করে। চীনের যানবাহন আমদানি করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়িশিল্প ও এর শ্রমিকেরা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, মূলত তা খতিয়ে দেখতেই তদন্তের আহ্বান করা হয়েছে।

একই সঙ্গে মেক্সিকোর মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারেরা যে চীনের গাড়ি আমদানি করে বাজার সয়লাব করে ফেলছে, সে বিষয়েও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি আছে, সেই চুক্তির সুযোগে চীনের কোম্পানিগুলো অন্য দেশে গাড়ি উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢোকানোর চেষ্টা করতে পারে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি কোম্পানিগুলোও চীনের গাড়ি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

অ্যালায়েন্স ফর অটোমোটিভ ইনোভেশনের প্রধান নির্বাহী জন বজেলা সেই গত জুন মাসেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পরিবেশ বিধিমালার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে চীনের অবস্থান আরও শক্তিশালী হতে পারে; সেই সঙ্গে দেশের গাড়ির বাজারেই চীন জেঁকে বসতে পারে।

গত সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় কমিশন এক তদন্ত শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য এটা দেখা যে ইউরোপের গাড়ি কোম্পানিগুলোকে সুরক্ষা দিতে চীনের গাড়ি আমদানিতে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে কি না।

এখন এ বিষয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলছেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে, সহযোগী ও মিত্রদের সঙ্গে একযোগে কাজ করা।

আইনপ্রণেতাদের চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানিগুলোও চীনে গাড়ি উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসছে। এসব কোম্পানির একটি টেসলা। চীনে তারা বিপুল পরিমাণে গাড়ি উৎপাদন করে।

আইনপ্রণেতারা মনে করছেন, এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে চীনে তৈরি গাড়িতে যে শুল্ক আছে, তা পর্যাপ্ত নয়।