যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ ১৪ দেশের চুক্তি, লক্ষ্য চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও আরও ১২টি দেশ সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য হলো চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতের ও অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন ব্যবস্থা ওই সব দেশে নিয়ে যাওয়া। এই দেশগুলো ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কের (আইপিইএফ) সদস্য।
সদস্যদেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার ও সমন্বিত করা লক্ষ্য নিয়ে গত বছর আইপিইএফ নামের এই উদ্যোগটি আলোর মুখ দেখে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ব্যাপারে বিশেষ চেষ্টা চালিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে প্রথম রাউন্ডের আলোচনা হয়।
যে ১৪টি দেশ এর সদস্য সেগুলো হলো ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই ও ভিয়েতনাম। বৈশ্বিক জিডিপির ৪০ শতাংশ এবং পণ্য ও সেবা বাণিজ্যের ২৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে এই দেশগুলো।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সরবরাহ ব্যবস্থাসংক্রান্ত চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে সান ফ্রান্সিসকোতে গত বুধবার। সেখানেই আইপিইএফ সদস্যদেশের মন্ত্রীরা বৈঠক করেন।
আরও বিনিয়োগ, সমন্বিত সরবরাহ ব্যবস্থা
চুক্তি সইয়ের কথা জানিয়ে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পিয়ুশ গয়াল এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন যে এটি বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও টেকসই করবে।
এই চুক্তির বিষয়ে দর-কষাকষি গত মে মাসে শেষ হয়েছিল। যেকোনো পাঁচটি সদস্যদেশ চুক্তিটি বাস্তবায়ন করলে এটি কার্যকর হয়ে যাবে। ভারত আশা করছে যে এই চুক্তির ফলে বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে তাদের অবস্থান আরও সংহত হবে, ফলে ভারতীয় পণ্য বিশ্ববাজারে আরও ভালোভাবে জায়গা করে নিতে পারবে।
আইপিইএফ কাঠামোতে চারটি পিলার বা স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হলো বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা, স্বচ্ছে অর্থনীতি ও ন্যায্য অর্থনীতি, যার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে কর ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের। বাণিজ্য ছাড়া বাকি সব বিষয়ে ভারত যোগ দিয়েছে।
সরবরাহ ব্যবস্থাসংক্রান্ত চুক্তির আওতায় তিনটি সংস্থা গঠিত হবে অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে। এগুলো হলো সরবরাহ ব্যবস্থা কাউন্সিল, সরবরাহ ব্যবস্থা-সংকট নিরসন নেটওয়ার্ক ও আইপিইএফ শ্রম অধিকার উপদেষ্টা বোর্ড।
আইপিইএফের বাণিজ্যসংক্রান্ত ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শেষ হতে আরও সময় লাগবে। তবে স্বচ্ছ অর্থনীতি ও ন্যায্য অর্থনীতিসংক্রান্ত আলোচনা দ্রুতই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।