ইউয়ানের দর উঁচুতে বেঁধে দিয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ইউয়ানফাইল ছবি: রয়টার্স

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানের যে মধ্যবর্তী দর বেঁধে দেয়, তার সঙ্গে এবার রয়টার্সের আনুমানিক হিসাবের ব্যবধান গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। রয়টার্স ইউয়ানের মধ্যবর্তী দরের যে ধারণা করেছিল, চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার চেয়ে উঁচুতে দেশটির মুদ্রার দর বেঁধে দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য, ইউয়ানের দরপতন ঠেকানো।

বাজার চালু হওয়ার আগে আজ চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) প্রতি ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মধ্যবর্তী দর বেঁধে দেয় ৭ দশমিক শূন্য ৯৪৮ ইউয়ান। বেঁধে দেওয়া এই মধ্যবর্তী দরের ২ শতাংশ কমবেশিতে ইউয়ানের লেনদেন করতে দেওয়া হয়।

রয়টার্সও ইউয়ানের দরের একটি আনুমানিক মধ্যবর্তী দাম হিসাব করেছিল। তবে চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানের যে দর ঠিক করেছে, রয়টার্সের দর তার চেয়ে কম। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের পর তাদের মধ্যকার ব্যবধান আর কখনোই এতটা বেশি ছিল না।

সম্প্রতি ইউয়ানের দর গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়। সে কারণে মুদ্রার যেন আর দরপতন না হয়, তা নিশ্চিত করতে ইউয়ানের দর কিছুটা উঁচুতে বেঁধে দিয়েছে পিবিওসি।

গত তিন মাসে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের দাম প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতির নিয়ন্ত্রণ শিথিল করবে—বাজারে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় ইউয়ানের ওপর চাপ বাড়ে। অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগাতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতির রাশ ছাড়তে যাচ্ছে। অর্থাৎ নীতি সুদহার কমাতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জাপানি মুদ্রা ইউয়ান দুর্বল হওয়ার কারণেও চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।

আরেকটি বিষয় হলো মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ফেড নীতি সুদহার হ্রাস না করা পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে এশিয়ার অন্যান্য দেশের মুদ্রার দরপতন অব্যাহত থাকবে। ফেডের নীতিসুদ হ্রাসের দিনটিকে অনেকে ‘ডি ডে’র (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পশ্চিম ইউরোপ মুক্ত করার অভিযান; ৬ জুন, ১৯৪৪) সঙ্গে তুলনা করেন, অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ডি ডের যে ভূমিকা ছিল, বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদ কমানোর ঘোষণা তার সঙ্গে তুলনীয়।