নিজের বিভিন্ন কোম্পানির এমডি-সিইওর চেয়েও আদানির বেতন কম
ভারতীয় বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি গৌতম আদানি সর্বশেষ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে মোট ১০ কোটি ৪১ লাখ রুপি বেতন পেয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। তবে পারিশ্রমিকের দিক থেকে তিনি ভারতের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের তুলনায় ঢের পিছিয়ে রয়েছেন। এমনকি নিজস্ব মালিকানাধীন আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর চেয়েও তাঁর বেতন কম। অর্থাৎ কোম্পানির চেয়ারম্যান তথা মালিক হয়েও তিনি গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহীদের চেয় কম বেতন পান কিংবা নেন।
আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সে দেশের গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এই সংবাদ পরিবেশন করেছে। ভারতের অর্থবছর হচ্ছে আগের বছরের ১ এপ্রিল থেকে পরের বছরের ৩১ মার্চ।
৬২ বছর বয়সী গৌতম আদানি তাঁর মোট ৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে দুটি থেকে পারিশ্রমিক পেয়েছেন। এর মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড (এইএল) থেকে বেতন বাবদ ২ কোটি ২৬ রুপি এবং সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা বাবদ ২৮ লাখ রুপি পেয়েছেন। আর আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এপিএসইজেড) থেকে নিয়েছেন ৭ কোটি ৮৭ লাখ রুপি। এর মধ্যে বেতন ১ কোটি ৮০ লাখ রুপি ও কমিশন ৬ কোটি ৭ লাখ রুপি।
এর আগের ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা বাবদ আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড (এইএল) থেকে ২ কোটি ৫৪ লাখ ও আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এপিএসইজেড) থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ রুপি মিলিয়ে মোট ৯ কোটি ২৬ লাখ রুপি পেয়েছিলেন গৌতম আদানি।
বার্ষিক পারিশ্রমিকে আদানির চেয়ে কারা এগিয়ে
২০২৪–২৫ অর্থবছরে ভারতের শীর্ষ অতিধনী আদানি গোষ্ঠীর মালিক-চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বেতন–ভাতা বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো দেশটির অন্যান্য শীর্ষ ব্যবসায়ীর তুলনায় কম। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ভারতী এন্টারপ্রাইজেসের চেয়ারম্যান সুনীল ভারতী মিত্তল ৩২ কোটি ২৭ লাখ রুপি; বাজাজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাজীব বাজাজ ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ রুপি এবং হিরোমোটো করপোরেশনের চেয়ারম্যান, এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পবন মুঞ্জাল ১০৯ কোটি রুপি আয় করেছেন। সর্বশেষ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এলঅ্যান্ডটি চেয়ারম্যান এস এন সুব্রাহ্মনিয়াম ৭৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি এবং ইনফোসিসের সিইও সলিল এস পারেখ ৮০ কোটি ৬২ লাখ রুপি আয় করেছেন।
তবে ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর থেকে তাঁর বেতন নেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। এর আগে তাঁর বার্ষিক বেতন ১৫ কোটি রুপিতে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন।
গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহীরাও আদানিকে ছাড়িয়ে
গৌতম আদানির নিজস্ব শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহীরাও বেতন–ভাতায় তাঁকে ছাড়িয়ে গেছেন। যেমন ২০২৪–২৫ অর্থবছরে গৌতম আদানি যেখানে বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা বাবদ ১০ কোটি ৪১ লাখ রুপি পেয়েছেন সেখানে তাঁর আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডের (এইএল) সিইও বিনয় প্রকাশ নিয়েছেন ৬৯ কোটি ৩৪ লাখ রুপি। এর মধ্যে ৪ কোটি রুপি বেতন ও ৬৫ কোটি ৩৪ লাখ রুপি সুযোগ-সুবিধা ও প্রণোদনা।
আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের (এজিইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ভনীত এস জাইন ১১ কোটি ২৩ লাখ রুপি আয় করেছেন। গ্রুপ সিএফও জুগেশিন্দর সিংও পেয়েছেন ১০ কোটি ৪০ লাখ রুপি।
আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এপিএসইজেড) থেকে আদানির ছেলে করণ ৭ কোটি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। একই সময়ে (২০২৪–২৫) এই কোম্পানির সিইও অশ্বিনী গুপ্ত ১০ কোটি ৩৪ লাখ রুপি পেয়েছেন।