ইউক্রেনের গুদামে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, বেড়েছে গমের দাম

রুশ হামলায় জ্বলছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি স্থাপনা
ছবি: রয়টার্স

বিশ্ববাজারে গমের দাম আবারও বেড়েছে। ইউক্রেনের দানিয়ুব নদীর এক বন্দরে রাশিয়ার ড্রোন হামলার পর গতকাল সোমবার গমের দাম ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ে বলে সিএনএনের খবরে জানানো হয়েছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই হামলাসহ আরও কিছু কারণে গত সপ্তাহে ৬০ হাজার টন শস্য নষ্ট হয়েছে ইউক্রেনের, বিশ্ববাজারে যার প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, দানিয়ুব নদীর এক বন্দরে রাশিয়া রাতের বেলায় শস্যগুদাম লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর ফলে রেনি বন্দরে একটি সাইলোর বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এ হামলার কারণে শুধু গমের দামই বাড়েনি, ভুট্টার দামও বেড়েছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। তাতে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে এখন প্রতি বুশেল গমের দাম দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ ডলার এবং ভুট্টার দাম ৫ দশমিক ৫ ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির জন্য দানিয়ুব নদী ব্যবহার করছে ইউক্রেন। বিবিসির এক সংবাদে বলা হয়েছে, এই নদী দিয়ে গত ১ বছরে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য পরিবহন করা হয়েছে, তার আগের বছরে যার পরিমাণ ছিল মাত্র ৬ লাখ টন।

দানিয়ুব নদীর রেনি বন্দর রোমানিয়ার কাছাকাছি, নদীপথে মাত্র ২০০ মিটার দূরেই দেশটির সীমান্ত। রাশিয়া এই প্রথম সেই দেশের এত কাছাকাছি হামলা চালাল। এমনকি রোমানিয়ার সেনা ও নাবিকেরাও নদীর পার থেকে বিস্ফোরণের আলো দেখছেন বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। দ্য কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট বলছে, রোমানিয়া এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সে বছরের জুন মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) খাদ্যমূল্য সূচক ১৫৪ দশমিক ৭-এ ওঠে। এরপর কৃষ্ণসাগর চুক্তি হওয়ার পর ধীরে ধীরে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমতে থাকে। চলতি বছরের জুন মাসে এফএও সূচক ১২২ দশমিক ৩-এ নেমে আসে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত শস্য চুক্তির আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন। মূলত ভুট্টা ও গম রপ্তানি করা হয়েছে সে দেশ থেকে। এসব রপ্তানির শীর্ষ গন্তব্যস্থল হলো চীন, ইতালি, স্পেন, তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডস।

এখন কৃষ্ণসাগর চুক্তি নবায়ন না হওয়া ও রাশিয়ার ড্রোন হামলার কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।