চীনে তৈরি গাড়ি ইতালীয় বলে ব্র্যান্ডিং, জরিমানা গুনতে হবে ৬৪ লাখ ডলার
আসলে গাড়িগুলো তৈরি হয়েছে চীনে। তবে বিক্রি বাড়াতে সেগুলো নিজেদের দেশে তৈরি বলে ব্র্যান্ডিং করে ইতালির একটি গাড়ি কোম্পানি। এমন অভিযোগে ওই কোম্পানিকে ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে ইতালির সরকার। খবর বিবিসির।
দক্ষিণ ইতালিভিত্তিক ডিআর অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছে ইতালির প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তারা বলছে, এই কোম্পানির ডিআর ও ইভিও ব্র্যান্ডের গাড়িগুলোকে ইতালিতে উৎপাদিত বলে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। যদিও সেগুলোর বেশির ভাগই চীনে তৈরি হয়েছিল।
চীনা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চেরি, বিএআইসি ও জেএসির উত্পাদিত যন্ত্রাংশ দিয়ে এসব কম দামের গাড়ি তৈরি করা হয়েছে। ইতালিতে শুধু ছোটখাটো সংযোজন ও ফিনিশিংয়ের কাজ করা হয়েছে, এমনটাই বলেছে প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এদিকে ডিআর অটোমোবাইলস জরিমানার বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলছে, গাড়িগুলো সম্পূর্ণ ইতালিতে তৈরি, এমন দাবি তারা কখনোই করেনি। অবশ্য জরিমানার প্রক্রিয়াটি এমন সময় হয়েছে, যখন ইতালির বাজারে ডিআর ও ইভিও গাড়ির বিক্রি রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।
গত মাসে মরক্কোর তৈরি কয়েক ডজন ফিয়াট টোপোলিনো মডেলের গাড়ি ইতালির বন্দর লিভোর্নোতে আটক করা হয়েছিল। তার কারণ, গাড়িগুলোতে ইতালির পতাকা আঁকা ছিল। ফিয়াটের মূল কোম্পানি স্টেলান্টিস বলেছে, তারা নিয়ম অনুসরণ করেই কাজটি করেছে। তারপরও সেই ঘটনার পর গাড়ি থেকে পতাকা সরিয়ে দিয়েছে।
ডিআর অটোমোবাইলসের বিরুদ্ধে ইতালি সরকার এমন সময় জরিমানা আরোপ করল, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চীনের তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর ৩৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিন্তাভাবনা করছে। বর্তমানে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আছে। তার মানে, বাড়তি শুল্কারোপ করা হলে মোট আমদানি কর ৪৮ শতাংশ হতে পারে।
ইউরোপীয় কমিশন গত সপ্তাহে বলেছে, চীনে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক গাড়িতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে, যদি গাড়ি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ না হয়। গত বছরের অক্টোবরে ইউরোপীয় কমিশন চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তাদের অভিযোগ, চীনের এসব কোম্পানিতে সরকার ভর্তুকি দেয়, সে কারণে এসব গাড়ির বাজারদর কম।
এদিকে গত মাসেই যুক্তরাষ্ট্র চীনে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০০ শতাংশ করার পদক্ষেপ নেয়। তারপরই ইইউ এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নেয়।
চীন সরকার ইতিমধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার এই পদক্ষেপ সুরক্ষাবাদী হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। গত মাসে চীন সরকার ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাসায়নিক আমদানি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।