গ্যাস উৎপাদন আরও বাড়াচ্ছে কাতার, মজুত এখন ২,০০০ টিসিএফ

প্রতীকী ছবি

বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে কাতার। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক উৎপাদন ১৪ কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত করতে চায় দেশটি।

আল-জাজিরার সংবাদে বলা হয়েছে, নিউ নর্থ ফিল্ড এক্সপ্যানশন, যা নর্থ ফিল্ড ওয়েস্ট নামে পরিচিত, সেই প্রকল্পের মাধ্যমে বার্ষিক ১ কোটি ৬০ লাখ টন উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে। কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী সাদ শেরিদা আল-কাবি গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সাদ আল-কাবি একই সঙ্গে কাতারের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি কাতার এনার্জির কর্ণধার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি কাতারের গ্যাস মজুত নিয়ে নতুন তথ্য দেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নর্থ ফিল্ডে বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত গ্যাসের মজুত আছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে ২৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট অতিরিক্ত গ্যাস আছে। ফলে কাতারের মজুত গ্যাসের পরিমাণ ১ হাজার ৭৬০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট থেকে বেড়ে ২ হাজার ট্রিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।

আল-কাবি আরও বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চলতি দশক শেষ হওয়ার আগেই কাতারের প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন সক্ষমতা ১৪ কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত হবে; অর্থাৎ এখন তাদের যে উৎপাদন সক্ষমতা, তার চেয়ে ৮৬ শতাংশ বাড়বে।

কাতার এনার্জির প্রধান আরও বলেন, এই প্রকল্প সময়মতো শেষ করতে শিগগিরই পূর্তকাজ শুরু করা হবে। কাতার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এলএনজি উৎপাদনকারী দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ার পরই তার স্থান।

কাতারের এলএনজির মূল ক্রেতা এশিয়ার দেশগুলো, যেমন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলোও এখন কাতারের কাছ থেকে এলএনজি কিনছে।

সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দেশ দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি কেনার চুক্তি করেছে। এরপরই কাতার উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা ঘোষণা করে। চলতি মাসের শুরুর দিকে কাতার জানায়, ভারতের পেট্রোনেটের কাছে ২০ বছর মেয়াদে বার্ষিক ৭৫ লাখ টন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এই গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে ২০২৮ সালের মে মাস থেকে।

এর আগে জানুয়ারির শেষ দিকে কাতার এনার্জি বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে চুক্তি করে। ১৫ বছর মেয়াদে প্রতিবছর ১৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করবে তারা।

এ ছাড়া গত বছর চীনের সিনোপেক, ফ্রান্সের টোটাল ও ব্রিটেনের শেল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে কাতার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে এলএনজির জন্য প্রতিযোগিতা তীব্র হয়। মূলত রাশিয়া থেকে ইউরোপে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় তার প্রতিস্থাপন হিসেবে ইউরোপ বিপুল পরিমাণ এলএনজি আমদানি করছে। সে কারণে বিভিন্ন দেশ এখন দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি কেনার চুক্তি করছে।