লন্ডন শহর
ফাইল ছবি

ভারতীয় ধনকুবের রবি রুইয়া লন্ডনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি রুপি বা ১১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড ব্যয়ে এক বাড়ি কিনেছেন। ব্লুমবার্গের সূত্রে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি ছিল লন্ডন শহরে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি বাড়ি, অর্থাৎ সম্প্রতি এত দামে লন্ডনে কোনো বাড়ি কেনাবেচা হয়নি।

সেই সঙ্গে আরও জানা গেছে, এই বাড়ির সঙ্গে রাশিয়ার বিনিয়োগকারী আঁদ্রে গনচারেঙ্কোর সম্পর্ক আছে।

বিষয়টি সঙ্গে সম্পৃক্ত এক সূত্র ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, রবি রুইয়ার পারিবারিক দপ্তর, যারা এসার গ্রুপের অন্যতম মালিক, হ্যানোভার লজ নামের এই বাড়ি কিনেছে। এই বাড়ি থেকে লন্ডনের সুপরিচিত উদ্যান রিজেন্ট পার্ক দেখা যায়। বাড়িটির মালিকানা ছিল জিব্রাল্টারে নিবন্ধিত একটি হোল্ডিং কোম্পানির কাছে।

সংবাদে বলা হয়েছে, দুই বছর আগের এই বাড়ির মালিক ছিলেন আঁদ্রে গনচারেঙ্কো। এই ব্যক্তি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গাজপ্রমের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গাজপ্রম ইনভেস্ট ইয়ুগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির রাজকুমার বাগরির কাছ থেকে ইজারার দায়সহ বাড়িটি কেনেন, বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত এক সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।

রুইয়ার পারিবারিক কার্যালয়ের এক মুখপাত্র ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘এই বাড়ি এখনো নির্মীয়মাণ; যে দামে এটি বিক্রি হচ্ছে, তাতে এটি পারিবারিক কার্যালয়ের জন্য যথেষ্ট আকর্ষণীয়।’

এই বাড়ি বিক্রির খবর অবশ্য প্রথম দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

যুক্তরাজ্যে এখন সুদের হার অনেক বেশি। সে কারণে ঋণ নিয়ে লন্ডনের মতো জায়গায় বিলাসবহুল বাড়ি অনেকেই কিনতে চান না। বাড়ি কেনাবেচার জন্য মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান নাইট ফ্রাঙ্ক জানিয়েছে, কমপক্ষে ৩ কোটি ডলার আছে পৃথিবীর এমন ১৭ শতাংশ মানুষ গত বছর অন্তত একটি বাড়ি কিনেছে।

এই বাড়ি বিক্রির ঘটনায় বোঝা যায়, লন্ডনের অতি দামি বাড়ির বাজার এখনো কতটা গোপনীয়তার মোড়া; যদিও লন্ডন শহর কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে গত বছর বিদেশিদের মালিকানাধীন বাড়ি নিবন্ধন করার কার্যালয় খুলেছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর পুতিন–ঘনিষ্ঠ রুশ ধনকুবেরদের বাড়ি কেনার প্রিয় জায়গা হিসেবে লন্ডনের সুনাম আরও বাড়াতে সরকার চেষ্টা করছে। তবে গনচারেঙ্কো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ধনকুবের নন।

এই ধনকুবেরদের লন্ডনে বাড়ি কেনা বন্ধ করতে অবশ্য যুক্তরাজ্যের ওপর চাপ আছে। কিছু কঠোর নিয়ম-কানুনও আরোপ করা হয়েছে, তবে সেসবের তেমন একটা প্রয়োগ নেই। এখনো অনেক বিলাসবহুল বাড়ি ক্রেতার তথ্য গোপন রেখেই কেনাবেচা হচ্ছে। এমনকি গত বছরের শেষ তিন মাসে বাড়ি কেনাবেচার বাজারকে পাশ কাটিয়ে রেকর্ডসংখ্যক বাড়ি বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে দামি বাড়ির ক্ষেত্রে এই প্রবণতা খুবই দৃশ্যমান।

আইনি প্রতিষ্ঠান উইদার্স রুইয়া পরিবারকে এই বাড়ি কেনায় আইনি পরামর্শ দিয়েছে। তবে মন্তব্য নিতে ব্লুমবার্গ গনচারেঙ্কোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁর নাগাল পায়নি।