কেমন যাবে ২০২৪ সালের বিশ্ব অর্থনীতি

প্রাপ্তি ও প্রত্যাশায় কমবেশি ফারাক থাকার মধ্য দিয়েই পুরোনো বছর বিদায় নেয়, শুরু হয় নতুন বছর। বরাবরের মতো এবারও নতুন আশাবাদে যাত্রা শুরু করল ২০২৪ সাল। নতুন এই বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে কী কী ঘটতে পারে, সেসব নিয়ে একটি ধারণা দিয়েছে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট

চলে গেল আরেকটি বছর—২০২৩; স্বাগত ২০২৪। গত কয়েক বছর বিশ্বে অনেক কিছুই ঘটে গেছে। যেমন কোভিড থেকে শুরু করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ। এসব কারণে টানা কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একধরনের ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে বিদায়ী ২০২৩ সালে উন্নত দেশগুলোতে মন্দার পূর্বাভাস ছিল, যদিও শেষমেশ তা হয়নি।

তবে অনেক বিশ্লেষক এখন আশা করছেন, ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে। এদিকে গত কয়েক বছরের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব অর্থনীতি কোথায় দাঁড়িয়ে আছে এবং ২০২৪ সালেই-বা কী হতে পারে, তা নিয়ে খাতভিত্তিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। দেখে নেওয়া যাক তারা কী কী পূর্বাভাস দিয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হবে ২.২%

২০২৪ সালেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা থাকবে। কয়েক বছর ধরে মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা চলছে; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও থামছে না। এ রকম পরিস্থিতিতে বিদায়ী ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ। এই ‘তিন যুদ্ধ’-এর প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। এর মধ্যেও মূল্যস্ফীতির হার কমবে ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বিরাজমান সংকট কমবে, এমন আশাবাদ তৈরি হয়েছে। তবে ধনী দেশগুলোর অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতি কমবে। আবার উন্নয়নশীল দেশগুলো ভালো করবে। সব মিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ।

গাড়ি বিক্রি বাড়বে ৩%

নতুন বছরে বৈশ্বিক গাড়িশিল্পেও ধীরগতি দেখা যাবে। এ বছর গাড়ি বিক্রি প্রাক্‌মহামারি পর্যায়ে ফিরতে পারবে না। তবে নতুন ব্যক্তিগত গাড়ি বিক্রির পরিমাণ বাড়বে ৩ শতাংশ, আর বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ শতাংশ। কার্বন নিঃসরণ নিয়ে দেশে দেশে আইন আরও কঠোর হবে, ফলে ডিজেলচালিত গাড়ির পরিসর ছোট হবে। বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রিতে অবশ্য গতি থাকবে, প্রবৃদ্ধি হবে ২৫ শতাংশ। তবে এই গাড়ির বাজার এখনো অতটা লাভজনক নয়, সে জন্য তাদের সরকারি ভর্তুকির ওপর নির্ভর করতে হবে।

প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২% ছাড়াবে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে এবং সেই সঙ্গে যেভাবে মার্কিন-চীন সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে, এই বাস্তবতায় ন্যাটোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সদস্যদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ২ শতাংশ ছাড়াবে, এটা অবশ্য ন্যাটোর দীর্ঘদিনের লক্ষ্যমাত্রা। এ বছর ন্যাটোর ৭৫তম বার্ষিকী পালিত হবে। বড় দেশগুলো প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করলে তা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে। ন্যাটোর নতুন সদস্য ফিনল্যান্ডও প্রতিরক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করবে। ব্রিটেন ও পোল্যান্ড লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই থাকবে, যদিও ফ্রান্স কিছুটা পিছিয়ে থাকবে। নতুন সদস্য সুইডেনও লক্ষ্যমাত্রার পেছনে থাকবে। অন্যদিকে চীনভীতির কারণে এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়বে। জাপানের প্রতিরক্ষা ব্যয় রেকর্ড ছোঁবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়বে ১১%

২০২৪ সালে বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়বে ১১ শতাংশ; তা সত্ত্বেও এ বছর বৈশ্বিক জ্বালানি চাহিদার ৮০ শতাংশ মেটাবে জীবাশ্ম জ্বালানি। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি কম হলেও এবার বৈশ্বিক তেলের চাহিদা বাড়বে ১ শতাংশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবে তেল উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ৮৫ ডলারের নিচে থাকবে। বিনিয়োগকারীরা সন্দিহান হলেও কয়লা ও গ্যাসের ব্যবহার বাড়বে। আবার অনেক দেশেই কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে, যেমন ব্রিটেন ও ইতালি।

খাদ্য, পানীয় ও তামাকের চাহিদা বাড়বে ৫%

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট জানিয়েছে, ২০২৪ সালে জ্বালানি ও সারের দাম কমে যাওয়া এবং ভালো ফসল হওয়ার কারণে খাদ্যের দাম কমবে। এ নিয়ে টানা দুই বছর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সূচক কমবে। কিন্তু এই পূর্বাভাস ঝুঁকিমুক্ত নয়। যুদ্ধ চলছে, সেই সঙ্গে আবহাওয়া প্রতিকূল রূপ নিলে বিশ্বের ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ক্ষুধার কবলে পড়বে। সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক খাদ্য, পানীয় ও তামাকের চাহিদা ৫ শতাংশ বেড়ে ১৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ১৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে এ বছর।

স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় জিডিপির ১০% ছাড়াবে

স্বাস্থ্য খাতে সমস্যার অন্ত নেই; এসব সমস্যা টাকা দিয়েও সমাধান করা যায় না। মহামারি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নতুন বছরে স্বাস্থ্য খাতে বৈশ্বিক ব্যয় মোট জিডিপির ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। তারপরও নাইজেরিয়ার মানুষের গড় আয়ু হংকংয়ের মানুষের গড় আয়ুর চেয়ে ৩০ বছর কম থাকবে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি হবে। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে, সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা পেতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চাপ বাড়বে; অনেকে হয়তো কাজ ছেড়ে দেবেন।

দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, এই শূন্যতা পূরণে সরকার এগিয়ে আসবে। কর ও বাধ্যতামূলক বিমার মধ্য দিয়ে সরকার স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় নির্বাহ করবে, কোভিডের আগে স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ সরকার বহন করত, ২০২৪ সালে তা ৮০ শতাংশে উন্নীত হবে।

এদিকে বৈশ্বিক ওষুধশিল্পে বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ এ বছর ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় হবে যুক্তরাষ্ট্রে আর চীনে ব্যয় হবে এক-দশমাংশ।

বৈশ্বিক অবকাঠামো খাতে ব্যয় বাড়বে ২.৭%

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সে দেশের পুরোনো অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে প্রার্থীরা কী প্রতিশ্রুতি দেন, সেটা ভোটারদের কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হওয়ারই কথা। তারপরও জো বাইডেন জ্বালানি ও পরিবহন খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে যে ব্যবস্থা নিয়েছেন, তার জন্য কৃতিত্ব দাবি করতেই পারেন। নতুন বছর বৈশ্বিক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ ২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে তা বাড়বে ১ শতাংশের মতো। ফলে অবকাঠামো খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ঘাটতি আগামী এক দশকে ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার বাড়বে। এশিয়া মহাদেশে এই ঘাটতি আরও বেশি; প্রতিবছর এই মহাদেশে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের ঘাটতি থেকে যাবে প্রায় ৪৫৯ বিলিয়ন বা ৪৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

২০২৪ সালে চীনে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ রেকর্ড স্পর্শ করবে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বালটিক অঞ্চলের দেশগুলো বিদ্যুতের গ্রিড সংযোগ মস্কো থেকে সরিয়ে এনে কেন্দ্রীয় ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত করবে। টেসলাসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করবে। ভারতে সড়ক নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগ হবে। এই খাতে ভারতের বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে ৯%

গত কয়েক বছর তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে বিনিয়োগ কমলেও নতুন বছরে এই খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গার্টনারের তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ৯ শতাংশের মতো বাড়বে। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত কম্পিউটার কেনাবেচা ২৬১ মিলিয়ন বা ২৬ কোটি ১০ লাখ ইউনিটে উন্নীত হবে। ২০২৪ সালে প্রতি ১০০ মানুষের মধ্যে ৪৯ দশমিক ২ জনের হাতে ব্যক্তিগত কম্পিউটার থাকবে; যা ২০১৯ সালে ছিল ৪৫ দশমিক ৭ জন। কয়েক বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। ২০২৪ সালেও তা অব্যাহত থাকবে। দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, প্রযুক্তির জগতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ হবে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ বা ‘এআই’। কোম্পানিগুলো ব্যবসার খরচ কমাতে বা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য আরও বেশি করে এআইয়ের মতো প্রযুক্তির দ্বারস্থ হবে।

বিজ্ঞাপন রাজস্ব বাড়বে ৫%

বিদায়ী ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মিডিয়া ও বিনোদন খাতে একধরনের ধীরগতি থাকলেও ২০২৪ সালে তা ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। নতুন বছরে বেশ কয়েকটি বড় ঘটনা ও অনুষ্ঠানের কারণে বিজ্ঞাপনী রাজস্ব বা আয়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বৃহৎ মিডিয়া সংস্থা ডেন্টসু। ২০২৪ সালে মিডিয়া ও বিনোদন খাতের রাজস্ব বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৭৬২ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৭৬ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। এবার দেখে নেওয়া যাক চলতি বছর কোন কোন ঘটনার কারণে বৈশ্বিক বিজ্ঞাপন খাতে রাজস্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনা কেমন। বছরের শেষ ভাগে আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ উপলক্ষে প্রার্থীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্যারিস অলিম্পিক ও ইউরো ২০২৪-এর মতো বৃহৎ আসরের কারণে বিজ্ঞাপনের পালে হাওয়া লাগবে। এই ব্যয়ের প্রায় অর্ধেক ডিজিটাল খাতে হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের শোরুমে ও ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি করছে। মূলত গ্রাহকদের খরচে আগ্রহী করতেই তারা এমন কৌশল হাতে নিচ্ছে।

সম্পদ খাতে ধীরগতি

ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক সম্পদ খাতে সুসময় আসছে না। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, লিজ বা ইজারা বাতিল হয়ে যাওয়া ও কর্মক্ষেত্রের ধরন বদলে যাওয়ার কারণে নতুন বছরে আবাসন খাতে চাহিদা কমে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানি কর্মীদের হোম অফিস, তথা ঘরে থেকে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে। সে জন্য দেশটির অনেক কার্যালয় ফাঁকা পড়ে আছে। হিসাব অনুসারে, সে দেশের ২০ শতাংশ কার্যালয় এখন ফাঁকা। ২০২৪ সালে কানাডায় খালি কার্যালয়ের পরিমাণ ১৫ শতাংশ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় খালি কার্যালয়ের পরিমাণ ৮ শতাংশে উন্নীত হবে। তাই উন্নত দেশগুলোতে বাণিজ্যিক আবাসনের চাহিদা কমবে। সেই সঙ্গে চীন সরকারের শত চেষ্টার পরও দেশটির আবাসন খাতে অতটা গতি আসবে না। এই বাস্তবতায় নতুন বছরে বৈশ্বিক সম্পদ খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে।

খুচরা বিক্রয়ে প্রবৃদ্ধি হবে ২%

বিশ্বে মূল্যস্ফীতির হার অনেকটাই কমে এসেছে। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছর তা আরও কমবে। তারপরও ভোক্তারা ব্যয় করতে অতটা আগ্রহী হবেন না। ক্রেডিট কার্ড খেলাপ ও পারিবারিক সঞ্চয় কমে যাওয়ার কারণে ভোক্তারা শিগগিরই উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসবেন না বলে ধারণা করছে দ্য ইকোনমিস্ট। সে জন্য তাদের পূর্বাভাস, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক খুচরা বিক্রিতে ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। তবে অনলাইনে খুচরা বিক্রয়ে প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশ; যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৭২ শতাংশ বেশি।

যাতায়াত ও পর্যটন

চলতি বছর পর্যটনশিল্পে ব্যাপকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকলেও খাতটিতে তেমন একটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। নতুন বছরেও আবহাওয়ার এল নিনো চক্র থাকবে। ফলে গরমের কারণে অনেক পরিবার ভ্রমণে উৎসাহিত হবে না। যুক্তি হলো, গরমে শিশুদের নিয়ে ভ্রমণ করা স্বাস্থ্যকর নয়। তবে এ বছর বৈশ্বিক পর্যটন খাত ২০১৯ সালের পর্যায়ে ফিরে যাবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১৮০ কোটিতে পৌঁছাবে। ফলে হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে ব্যয় ২০২০ সালের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বাড়বে। আন্তর্জাতিক পর্যটন ব্যয় এ বছর রেকর্ড ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে।