তেলের দাম ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ, সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা

জ্বালানি তেল

বিশ্ববাজারে আবারও বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। তেলের সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা ও লিবিয়ায় তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় আরেক দফা বেড়েছে তেলের দাম। ফলে তেলের দাম এখন গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সরবরাহ নিয়ে এই আশঙ্কার কারণে চীনের অর্থনীতির ধীরগতি ও অপ্রতুল চাহিদার আশঙ্কা সত্ত্বেও দাম বেড়েছে।

আজ বুধবার সকালে বিশ্ববাজারে তেলের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম উভয়ই বেড়েছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৯২ দশমিক ১৪ ডলারে ওঠে; ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৮ দশমিক ৯৮ ডলারে ওঠে।

গতকাল মঙ্গলবারও এই দুই ধরনের তেলের দাম ২ শতাংশ বেড়ে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল।

রাকুটেন সিকিউরিটিসের পণ্য বিশ্লেষক সাতোরু ইয়াশিদা রয়টার্সকে বলেন, একদিকে ওপেক তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছে, আরেক দিকে ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) বিশ্বের তেলের ভান্ডারগুলোয় মজুত হ্রাসের পূর্বাভাস দিচ্ছে; সেই কারণে বাজারে তেলের সরবরাহ আরও অন্তত কিছুদিন কম থাকবে।

এ ছাড়া লিবিয়ায় মারাত্মক ঝড়ের কারণে দেশটির পূর্বাঞ্চলের চারটি রপ্তানি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে গেছে, সেই কারণেও তেলের সরবরাহে টান থাকবে বলেই আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে।

তবে মূল বিষয় হলো চাহিদা ও সরবরাহ। সাতোরু ইয়োশিদা মনে করেন, চীনে অর্থনীতির ধীরগতির কারণে বাজারে তেলের চাহিদা খুব বেশি বাড়বে না, ফলে দামও খুব বেশি বাড়বে না।

তবে ওপেক মনে করছে, ২০২৩ সালের বাকি সময় ও ২০২৪ সালেও বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা বাড়বে। এর কারণ হিসেবে তারা মনে করছে, বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নীতি সুদহার বৃদ্ধির ধাক্কা সামলেও প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করেছে।

এদিকে সরবরাহ টান টান থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরব ও রাশিয়া গত সপ্তাহেই বলেছে, তারা যে নিজে থেকে দৈনিক ১৩ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাস করেছিল, সেই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের শেষাবধি টেনে নিয়ে যাবে।

এদিকে ইআইএ বলেছে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয় ভাগ পর্যন্ত বৈশ্বিক তেলের মজুত দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল কমবে। এতে তেলের দাম বাড়বে এবং এতে করে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯৩ ডলারে উঠবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল, ডিস্টিলেট ও গ্যাসোলিনের মজুত গত সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের মজুত বেড়েছে ১২ লাখ ব্যারেল। গ্যাসোলিনের মজুত বেড়েছে ৪২ লাখ ব্যারেল আর ডিস্টিলিটের মজুত বেড়েছে ২৬ লাখ ব্যারেল।