পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অবস্থা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে খারাপ

অর্থনৈতিক সংকটে পাকিস্তানে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। কম দামে খাদ্য কিনতে সরকারি বিক্রয়কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের ভিড়
ফাইল ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর অবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। সংস্থাগুলোর সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ তাদের সম্পদের তুলনায় দ্রুত হারে বাড়ছে। ফলে দেশটির সম্পদ কমে যাচ্ছে, যা দেশটির সার্বভৌমত্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

পাকিস্তানের শীর্ষ দৈনিক দ্য ডনের সংবাদে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিবছর ৪৫ হাজার ৮০০ কোটি রুপি ঢালতে হচ্ছে সরকারকে। দিন দিন বাড়ছে এসব সংস্থার ঋণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসব সংস্থার সম্মিলিত ঋণ ও গ্যারান্টির পরিমাণ ছিল জিডিপির ১০ শতাংশ বা ৫ লাখ ৪০ হাজার কোটি রুপি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যা ছিল জিডিপির ৩ দশমিক ০১ শতাংশ বা ১ লাখ ৫ হাজার কোটি রুপি।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ‘এসব সংস্থা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য এটি যথেষ্ট গুরুতর আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।’

বিশ্বব্যাংকের সরকারি ব্যয় পর্যালোচনা ২০২৩-এ বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম লাভজনক।

ক্ষতিপূরণের জন্য পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোকে ভর্তুকি, ঋণ ও ইকুইটি মাধ্যমে সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল মোট জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ। সরাসরি আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণসুবিধাও দিচ্ছে এসব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে। সেই ঋণের জামানত সরকার নিজেই।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশি-বিদেশি ঋণ ও গ্যারান্টির বিপরীতে পাকিস্তান সরকারের সম্মিলিত রাজস্ব দায় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে গড়ে বার্ষিক ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তথ্যানুসারে, সরকারের রাজস্ব দায়ের বড় একটি অংশ হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর ঋণের গ্যারান্টি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল সরকারের মোট দায়ের ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ, যেখানে বিদেশি ঋণ ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত বিভিন্ন খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর লাভ-ক্ষতি নির্ভর করেছে। তবে সাধারণতভাবে ব্যবস্থাপনাজনিত সংকটের কারণেই এসব সংস্থা এতটা ক্ষতির মুখে পড়েছে। সরকারের নীতিও এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও যোগাযোগ খাতের সংস্থাগুলোই সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও তেল খাতের কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা মুনাফার মুখ দেখে।