টেসলার নতুন সিদ্ধান্ত, ভারত ও মেক্সিকোতে কারখানা নির্মাণ অনিশ্চয়তায় পড়েছে

টেসলার নতুন ঘোষণায় ভারত ও মেক্সিকোতে তাদের নতুন কারখানা নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির এই নির্মাতা কোম্পানি বলেছে, চলতি বছরের শেষ দিকেই তারা বিদ্যমান যেসব কারখানা আছে, সেগুলোতে নতুন ও সাশ্রয়ী গাড়ি তৈরি করবে। এই ঘোষণার কারণেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় টেসলা উৎপাদন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করে বর্তমান সক্ষমতা বার্ষিক ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লাখের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চায়। এরপর তারা নতুন কারখানা করার চিন্তা করবে।

টেসলার এই মনোভাবের কারণে প্রাথমিকভাবে গাড়ির উৎপাদন খরচ যতটা কমবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, ঠিক ততটা কমবে না। তবে এই অনিশ্চিত সময়ে তাদের পক্ষে আরও সাশ্রয়ীভাবে গাড়ির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।

এই সিদ্ধান্তে টেসলার বিনিয়োগকারীরা খুশি। ফলে প্রথম প্রান্তিকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলেও গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের মূল লেনদেনের পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে।

বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইভলভ ইটিএফের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা এলিয়ট জনসন রয়টার্সকে বলেন, এটা ভালো যে ইলন মাস্ক কেবল ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন না; সেই সঙ্গে তিনি যে বিদ্যমান কারখানায় সস্তা গাড়ি উৎপাদন করছেন, সেটাও ভালো লক্ষণ। ইভলভ ইটিএফ প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল ব্যবস্থাপনা করে। টেসলাসহ বিশ্বের আরও বেশ কয়েকটি তহবিলে বিনিয়োগ করেছে এই ইভলভ।

চলতি মাসের শুরুতে টেসলা জানায়, কম দামের গাড়ি বানানো হবে না। বিনিয়োগকারীরা অবশ্য আশা করছিলেন, কম দামি গাড়ি তৈরির মধ্য দিয়ে টেসলা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। এর বদলে টেসলা রোবোট্যাক্সি তৈরিতে মনোযোগ দেবে, আর সেটা করা হবে বিদ্যমান প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

আগের পরিকল্পনা ছিল, কম দামের মডেল ২ গাড়ি টেক্সাস, মেক্সিকো ও তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি করা হবে। মডেল ২-এর দাম ২৫ হাজার ডলারে নেমে আসবে বলেও আশা করা হচ্ছে; এটাই হবে গাড়ির গণবাজারে বড় হিস্যা নেওয়ার ক্ষেত্রে টেসলার হাতিয়ার।

এদিকে চলতি মাসে ভারতে আসার কথা ছিল ইলন মাস্কের। কিন্তু তাঁর এই সফর পিছিয়ে গিয়েছে। এরপর ঠিক কবে তিনি ভারতে আসবেন, তা এখনো জানা যায়নি। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মাস্ক জানান, টেসলার কিছু কাজের দায়বদ্ধতা আছে, সে কারণে ভারত সফর স্থগিত করতে হয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তবে চলতি বছরের শেষে ভারতে আসার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন এই ধনকুবের।

মার্চ মাসে বৈদ্যুতিক গাড়ি-সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে মোদি সরকার। সেই নীতিতে বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানি বিদেশ থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি করলে আপাতত শুল্কছাড় পাবে। তবে তাদের কিছু শর্ত মানতে হবে, যেমন তিন বছরের মধ্যে ভারতে ন্যূনতম ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগে কারখানা নির্মাণ।

ইলন মাস্ক গত বছর বলেছিলেন, টেসলা মেক্সিকোতে কারখানা করতে চায়। যদিও বিষয়টি নির্ভর করবে সেখানকার অর্থনীতি ও সুদহারের ওপর, অর্থাৎ মানুষের সাধ্যের মধ্যে তা থাকবে কি না, তার ওপর। তবে টেসলা বা ইলন মাস্কের পক্ষ থেকে নতুন করে ভারত ও মেক্সিকোর কারখানা নিয়ে কিছু বলা হয়নি।