দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিপুল সম্পদ হারিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আদালত কক্ষের বাইরে ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি: এএফপি

নিউইয়র্কের আদালতে এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঠিক আগে এক দিনেই বিপুল অর্থমূল্যের সম্পদ হারিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার তাঁর গণমাধ্যম কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার কারণে তিনি এই সম্পদ হারান। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পদ হারিয়েছেন মূলত কাগজে–কলমে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গতকাল দিন শেষে ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের শেয়ারের দাম কমে যায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এই কোম্পানিতে যেহেতু সাবেক প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে বেশি শেয়ার রয়েছে, তাই তাঁর ক্ষতিই হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

শেয়ারবাজারে যখন লেনদেন শেষ হয়, তখন ওই কোম্পানিতে ট্রাম্পের শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ৫৬০ কোটি ডলার। ঠিক এক দিন আগে ওই শেয়ারের দাম ছিল প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক দিনেই ট্রাম্পের শেয়ারের মূল্যমান কমেছে প্রায় ৪০ কোটি ডলার।

ট্রুথ সোশ্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মালিক প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প মিডিয়া। গত মার্চে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ফলে ট্রাম্প কাগজে–কলমে কয়েক শ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক হন। একই সঙ্গে তিনি প্রথমবারের মতো বিশ্বের ধনী ৫০০ ব্যক্তির তালিকায়ও ঢুকে পড়েন। তবে পাশাপাশি তাঁকে আদালতে মামলা চালাতে বিপুল অর্থও খরচ করতে হয়।

ট্রাম্প মিডিয়ার শেয়ারের দাম অবশ্য খুব বেশি ওঠানামা করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট চাইলেই আগামী সেপ্টেম্বরের আগে শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন না। কারণ, এই শেয়ারগুলো লক–আপ চুক্তির বাধ্যবাধকতায় রয়েছে।

গতকাল নিউইয়র্কের আদালতে ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের মামলায় ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার ন্যাসডাক শেয়ারবাজার বন্ধের সময় ট্রাম্প মিডিয়ার তাঁর শেয়ারের দাম ছিল ৫৯০ কোটি ডলার। কিন্তু গতকাল একপর্যায়ে তাঁর শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ৫৫০ কোটি ডলার। পরে দাম খানিকটা বাড়ে।

ট্রাম্প মিডিয়ার আর্থিক পরিস্থিতি এখনো সাফল্যের মুখ দেখেনি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এই কোম্পানির লোকসান ২১ কোটি ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ সময়ে কোম্পানির আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ ডলার।

মিম স্টক হিসেবে যেসব শেয়ার পরিচিত, ট্রাম্প মিডিয়ার শেয়ার এখন তাই–ই হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেয়ারবাজারে ফিসফাস আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাগাড়ম্বরের মধ্য দিয়ে এসব শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হয়। ট্রাম্পের শেয়ার কিনতে বেশি আলোচনা হয়েছে ট্রুথ সোশ্যালে। ট্রাম্পের অনেক সমর্থক তাঁর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই কোম্পানির শেয়ার কিনতে অন্যদের আহ্বান জানিয়েছেন।

এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি তাঁর মিডিয়া কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে শত শত কোটি ডলার আয় করতে চান, তবে শেয়ারের দাম সেই আগের পর্যায়ে যেতে হবে, যখন শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল।