তেল উৎপাদন কমালেও সৌদি আরব এশিয়ায় সরবরাহ কমাবে না

বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি করতে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো। কিন্তু ওপেকের অন্যতম সদস্যদেশ সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি আরামকো জানিয়েছে, উত্তর এশিয়ার যেসব দেশ বা কোম্পানির সঙ্গে আগেই চুক্তি হয়েছে, তাদের তেল সরবরাহ করবে সৌদি আরব।  

বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত সপ্তাহেই ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর জানায়, আগামী মে মাস থেকে শুরু করে তারা দৈনিক তেল উৎপাদন ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন বা ১১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কমাবে। তাদের এই ঘোষণায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম গত সপ্তাহে ৬ শতাংশ বেড়েছে। ফলে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি আবার ৮০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।  

সৌদি আরব আগের চুক্তি অনুসারে তেল সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে ঠিকই, তবে তারা ঘোষণা অনুযায়ী দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমায় কি না, তা নজরে রাখবেন পর্যবেক্ষকেরা। বিশেষ করে এশিয়ায় তাদের সরবরাহের দিকে নজর থাকবে বলে জানাচ্ছে রয়টার্স।

ওপেকের এভাবে তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় সরবরাহ প্রকৃত অর্থেই কমবে, নাকি এই ঘোষণা কেবল মূল্যবৃদ্ধির জন্য দেওয়া হয়েছে, সেটি অনেককেই ভাবাচ্ছে। এশিয়া অঞ্চলের এক তেল পরিশোধন কোম্পানি রয়টার্সকে এ তথ্য দিয়েছে।

গত সপ্তাহে আরামকো এশিয়ার ক্রেতাদের জন্য তাদের মূল পণ্য আরব লাইট ক্রুডের মূল্যবৃদ্ধি করেছে। একদিকে উৎপাদন কমানোর কারণে সরবরাহ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, আরেক দিকে এশিয়ার গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন মানের তেলের মূল্যবৃদ্ধি করছে তারা।

গত বছরের অক্টোবর মাসেও তেল উৎপাদন কমানোর সময় সৌদি আরামকো এশিয়ার দেশগুলোতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছিল।

আরামকোর মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি জানিয়েছে, তারা অন্তত এশিয়ার তিনটি দেশকে আগের চুক্তি অনুসারে জুন মাসে তেল সরবরাহ করবে।

এদিকে এশিয়ার তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় এই অঞ্চলের বড় বড় তেল পরিশোধনাগারগুলো পরিশোধনের সক্ষমতা কমাচ্ছে।

এই বাস্তবতায় সবাই তাকিয়ে আছে চীনের দিকে। দেশটি লকডাউন বা বিধিনিষেধ থেকে বেরিয়ে এসেছে। ফলে তাদের তেলের চাহিদা বাড়বে। চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক।

এদিকে বাইডেন প্রশাসনসহ পশ্চিমা দেশগুলো অনেক দিন ধরেই সৌদি আরব ও ওপেক প্লাসকে তেল উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তাদের উদ্দেশ্য, তেলের দাম কমানো। কিন্তু ওপেকের নেতারা সেই আহ্বানে সাড়া দেননি। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রীয় মজুত থেকে স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও কয়েকটি দেশ মজুত থেকে তেল সরবরাহ করেছে। তবে এখন আর সে পথে হাঁটছে না যুক্তরাষ্ট্র।