ভারতে যাবে আরও ৫০০ টন ইলিশ, বন্ধে এবার মামলা হবে

ইলিশ মাছ
ফাইল ছবি

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়ার তিন দিনের মাত্রায় ভারতে আরও ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার ভারতে এক দফায় গত ৪ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় গত বুধবার আরও ৫০০ টন রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ভারতে রপ্তানির জন্য দুই দফায় অনুমোদন দেওয়া হলো মোট দুই হাজার ৯৫০ টন।

প্রথম দফায় ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন করে মোট দুই হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ইলিশ রপ্তানিও হচ্ছিল। বুধবার দেওয়া হয় ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্যসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর গত ১১ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি ডাক যোগে আইনি নোটিশ পাঠান আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা না দেওয়া হলে উচ্চ আদালতে রিট করবেন বলে জানিয়েছিলেন নোটিশদাতা এ আইনজীবী। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সাত দিন শেষ হবে। তিনি ওই দিন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। কিন্তু অতিরিক্ত দামের কারণে দরিদ্র মানুষ তা কেনার কথা কল্পনাও করতে পারে না। এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণিও কিনতে পারে না। জনগণের চাহিদা সত্ত্বেও বাণিজ্যসচিব ৪ সেপ্টেম্বর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছেন। ভারতে ইলিশ রপ্তানির কারণে দেশের বাজারে ইলিশের দাম বাড়ছে।’

মাহমুদুল হাসানের মতে, দেশের বাজারে ইলিশের যে দাম, তার চেয়ে ভারতে রপ্তানিমূল্য কম। তাই স্থায়ীভাবে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি নোটিশ পাঠান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো অবশ্য বলছে, তাদের কাছে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো আইনি নোটিশ আসেনি।

সাত দিন শেষ হলে কী করবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান আজ রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি রিট মামলা করব।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুই দফায় ১১৫ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও অনেকেই রপ্তানি করেনি। তবে তার আগের বার ২০২০ সালে প্রথমে এক হাজার ৪৫০ টন ও পরে আরও ৪০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যার পুরোটাই রপ্তানি হয়েছে।

যেসব শর্ত দিয়ে প্রতি বছর ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়, এবারও সে সব শর্তই থাকবে। এগুলো হচ্ছে বিদ্যমান রপ্তানিনীতির বিধিবিধান মানতে হবে, শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইলিশের কায়িক পরীক্ষা করাতে হবে এবং প্রতিটি চালান (কনসাইনমেন্ট) শেষে রপ্তানিসংক্রান্ত কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে।

এ ছাড়া অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ রপ্তানি না করা, অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তর না করা এবং অনুমোদিত রপ্তানিকারক ছাড়া ঠিকায় (সাব কন্ট্রাক্ট) রপ্তানি না করার শর্ত থাকবে। আগেও এ সব শর্ত ছিল।