রাশিয়া–ভারত বাণিজ্যে ডলার লাগছে না

ডলারছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্যে মার্কিন ডলারের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিকস আন্তর্জাতিক ফোরামের সভাপতি পূর্ণিমা আনন্দ। এর পরিবর্তে দেশ দুটি এখন বাণিজ্যিক লেনদেনে নিজ নিজ জাতীয় মুদ্রার দিকে ঝুঁকছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি। খবর আরটির

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের ব্যবহার কমাতে বিশ্বব্যাপী চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মিত্র দেশগুলো। এর অংশ হিসেবে আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক মাধ্যম সুইফট ব্যবহার করে রুবলের মাধ্যমে লেনদেনেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে ভারতের মতো অনেক দেশ পশ্চিমা শক্তির চোখরাঙানি উপেক্ষা করে আলাদাভাবে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন করছে।

এ প্রসঙ্গে ব্রিকস আন্তর্জাতিক ফোরামের সভাপতি পূর্ণিমা আনন্দ বলেন, ‘আমরা এখন রুবল ও রুপিতে পারস্পরিক লেনদেন করেছি। ফলে আমাদের পারস্পরিক লেনদেনে আর ডলার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। ভারত-রাশিয়ার মতো চীন-রাশিয়াও এখন রুবল ও ইউয়ানে পারস্পরিক লেনদেন করছে। এর মানে হচ্ছে, ব্রিকসের দেশগুলো রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাশিয়াকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দিচ্ছে ব্রিকস।’

গত চার দশকে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য পাঁচ গুণ বেড়েছে জানিয়ে পূর্ণিমা আনন্দ বলেন, মস্কো ভারতে বিপুল তেল সরবরাহ করে; বিনিময়ে প্রচুর পরিমাণে কৃষিপণ্য, পোশাক, ওষুধ কেনে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা জোটের নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রমে ভারতকে নিরপেক্ষ পক্ষ বলে মনে করেন পূর্ণিমা আনন্দ। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে ভারত প্রয়োজনীয় যেকোনো ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়ে পশ্চিমাদের চাপ ছিল জানিয়ে ব্রিকস আন্তর্জাতিক ফোরামের সভাপতি আরও বলেন, যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করতে ভারতের ওপর চাপ ছিল। কিন্তু এ চাপ উপেক্ষা করতে হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ভারত তখন রাশিয়াকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করবে না বলে আশ্বস্ত করেছিল।

ফলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কোনোভাবেই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না বলে মনে করেন পূর্ণিমা আনন্দ। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা—বিশ্বের এই পাঁচটি বৃহৎ উদীয়মান অর্থনীতির জোট হলো ব্রিকস।