ভারতের শেয়ারবাজারে নিষিদ্ধ অনিল আম্বানিসহ ২৫ ব্যবসায়ী
ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির ভাই অনিল আম্বানিসহ ২৫ ব্যবসায়ীকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)। অভিযোগ, তাঁরা পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ অননুমোদিত ব্যবসায় সরিয়ে নিয়েছেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, অনিল আম্বানির রিলায়েন্স হোম ফিন্যান্সের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে তহবিল সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সেবি। সে জন্য তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য শেয়ারবাজার থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে ২৫ কোটি রুপি। ২২২ পৃষ্ঠার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছর সেবির তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির পরিচালনাসংক্রান্ত অন্য কোনো পদে থাকতে পারবেন না অনিল আম্বানি। তাঁর কোম্পানির কর্মকর্তা অমিত বাপনা, রবীন্দ্র সুধালকার ও পিঙ্কেশ আর শাহও শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন।
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে অনিল আম্বানিসহ অন্য ব্যবসায়ীরা শেয়ার কেনাবেচা বা অন্য যেকোনো লেনদেন করতে পারবেন না। এ বিষয়ে রিলায়েন্স গ্রুপের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আর্থিক সেবা, অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা আছে রিলায়েন্সের। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বে আছেন অনিল আম্বানির ভাই মুকেশ আম্বানি। পিতা ধীরুভাই আম্বানির মৃত্যুর পর দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ হয়। একপর্যায়ে তাঁরা আলাদা হয়ে যান। একসময় মুকেশের চেয়ে অনিল আম্বানি ধনী ছিলেন। কিন্তু ভুল বিনিয়োগের খেসারত হিসেবে একসময় তিনি দেউলিয়া হয়ে পড়েন।
অনিল আম্বানির নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স গ্রুপের তিনটি প্রধান কোম্পানি হলো রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস, রিলায়েন্স ক্যাপিটাল ও রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। তিনটি কোম্পানিই দেউলিয়া বা ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
সেবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনিল ও তাঁর কোম্পানি রিলায়েন্স হোম ফিন্যান্সের কয়েকজন কর্মকর্তা কোম্পানির তহবিলের একাংশ তাঁদের সহযোগী ব্যবসায়িক কোম্পানিগুলোর ‘ঋণ’ হিসেবে ‘ছদ্মবেশে’ সরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন। কয়েক বছর আগে শেয়ারবাজারে বেআইনি সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে রিলায়েন্সের ব্যবসায়িক সহযোগী ফিউচার রিটেইলের (এফআরএল) প্রধান কিশোর বিয়ানি, অনিল বিয়ানি ও ফিউচার করপোরেট রিসোর্সেস (এফসিআরএল) ও এফসিআরএল এমপ্লয়ি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টকে শেয়ারবাজারে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল সেবি।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ রিলায়েন্স হোম ফিন্যান্সের শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শেয়ার প্রায় ১৩ শতাংশ ও রিলায়েন্স পাওয়ারের শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ কমেছে।
সেবি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে মূলত দুটি অভিযোগ এনেছে। এর মধ্যে আছে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ তহবিল অননুমোদিত খাতে সরিয়ে নিয়ে কোম্পানি ও এর শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি করা এবং আর্থিক হিসাব–নিকাশে কারসাজি করে শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে তথ্য গোপন করা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, রিলায়েন্স হোম ফিন্যান্স থেকে ৯ হাজার কোটি রুপির বেশি ঋণ অজ্ঞাত ঋণগ্রহীতাদের দেওয়া হয়েছিল, যাদের আর্থিকভাবে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা ছিল না।