ট্রাম্পের শুল্কের হুমকি, কী প্রভাব পড়তে পারে ভারতে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদনে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে পাল্টা সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করলে ভারতে অ্যাপলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিষয়টি হলো, অ্যাপল ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা করেছিল, এখন ট্রাম্প যদি ভারতের পণ্যে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে অ্যাপল ভারতে উৎপাদনের বিষয়ে আগ্রহ হারাতে পারে।
এ ছাড়া ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করলে অ্যাপলের বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা হারাতে পারে ভারতের গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী সংস্থাগুলো। চলতি অর্থবছরে এরা যুক্তরাষ্ট্রে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করেছে।
ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, ইলেকট্রনিকস খাতে এখন ভারত থেকে অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক কোম্পানি হলো অ্যাপল। বিশেষজ্ঞমহলের হিসাবে, চলতি অর্থবছরে অ্যাপল ভারত থেকে মোট ৮-৯ বিলিয়ন বা ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভারত থেকে আইফোন আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে না। এ কারণে অ্যাপলের পক্ষে ভারতে উৎপাদন করা লাভজনক।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন ও অন্য ইলেকট্রনিকস পণ্য আমদানিতে ভারত সরকার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার হুমকি দিচ্ছেন, ভারতসহ যেসব দেশের আমদানি শুল্ক বেশি, তাদের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ট্রাম্প যদি সত্যিই ভারত থেকে আমদানি হওয়া স্মার্টফোন ও ইলেকট্রনিকস পণ্যে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, সে ক্ষেত্রে সব সমীকরণ পাল্টে যাবে। অ্যাপলের মতো কোম্পানি ভারতে উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রণোদনা পাবে না।
শুধু অ্যাপল নয়, স্যামসাং–মোটোরোলাসহ যেসব স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থা ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে, তারা সবাই সমস্যায় পড়বে। সে ক্ষেত্রে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রপ্তানি মার খাবে।
অন্যদিকে গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী ভারতীয় কোম্পানিগুলোর চিন্তা বাড়ছে। এখন ভারত থেকে যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে ১-২ শতাংশ শুল্ক আছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যন্ত্রাংশ আনার ক্ষেত্রে ভারতের আমদানি শুল্ক ৭ দশমিক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ। ট্রাম্প প্রশাসন সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করলে স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি মার খাবে।
এদিকে অ্যাপল সোমবার ঘোষণা দিয়েছে, টেক্সাসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বড় সার্ভার গড়ে তুলতে এবং গবেষণা ও উন্নয়নে প্রায় ২০ হাজার চাকরি সৃষ্টি করতে আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন বা ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কেনার পাশাপাশি অ্যাপল টিভি ও পরিষেবার জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রে টেলিভিশন শো ও চলচ্চিত্র তৈরি করবে।
এদিকে গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অ্যাপল সিইও টিম কুক। তার পরেই কোম্পানির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা আসে।