ভারতে গমের দাম ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

গম
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বাজারে গমের দাম ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। গত মঙ্গলবার দাম বাড়ার পর পরিবেশকেরা জানান, সরবরাহ কমে যাওয়া এবং সামনে উৎসবের মৌসুম থাকার কারণে চাহিদা চাঙা, সে কারণেই গমের দাম বাড়ছে।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গমের ক্রমবর্ধমান এই দামের কারণে শস্যের ওপর থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার ও দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে পারে। সামনেই ভারতের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের নির্বাচন, সেই সঙ্গে আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচন। সে কারণে কেন্দ্রীয় সরকার এখন দাম নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তবে গমের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বাড়বে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা জটিলতার মুখে পড়তে পারে।

নয়াদিল্লিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী এনডিটিভিকে বলেছেন, সব গুরুত্বপূর্ণ গম উৎপাদন কেন্দ্রে গম সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলা যায়। আটার কলগুলো বাজার থেকে প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাচ্ছে না।

মঙ্গলবার মধ্য প্রদেশের ইন্দোরে গমের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন ২৫ হাজার ৪৪৬ রুপিতে দাঁড়িয়েছে, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারির পর যা সর্বোচ্চ। গত চার মাসে ভারতে গমের দাম প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ভারতের মুম্বাইভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেছেন, আসন্ন উৎসবের মৌসুমে বাজারে ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের উচিত হবে, গুদাম থেকে বাজারে গম ছাড়া।

১ আগস্ট পর্যন্ত দেখা গেছে, ভারত সরকারের গুদামে গমের মজুত আছে ২৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৮৩ লাখ মেট্রিক টন; আগের বছর যা ছিল ২৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৬৬ লাখ টন।

মুম্বাইভিত্তিক ওই পরিবেশক বলেন, বাজারে গমের দাম কমাতে হলে আমদানি জরুরি। আমদানি ছাড়া সরকারের পক্ষে সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।
ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সঞ্জীব চোপড়া গত সপ্তাহে বলেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গম আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক তুলে নেওয়া বা এমনকি তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ ছাড়া মিলমালিক ও ব্যবসায়ীরা ঠিক কত পরিমাণ আটা মজুত রাখতে পারবেন, তার সীমা হ্রাস করা হতে পারে।

২০২৩ সালে ভারতে ১১২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন বা ১১ কোটি ২৭ লাখ টন গম উৎপাদিত হয়েছে; আগের বছর যা ছিল ১০ কোটি ৭৭ লাখ টন। ভারতের বার্ষিক গমের চাহিদা ১০ কোটি ৮০ লাখ টন।

তবে ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক বাণিজ্য সংগঠন গত জুনে রয়টার্সকে বলেছে, ২০২৩ সালে ভারতে গম উৎপাদন বাস্তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবের চেয়ে ১০ শতাংশ কম হয়েছে।
এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ কিছু জাতের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর চিনি রপ্তানিতেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে ধারণা করছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা।