ল্যাপটপ আমদানির লাইসেন্স, পিছু হটেছে ভারত

ল্যাপটপ
ছবি: রয়টার্স

ভারতে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট আমদানিকারকদের লাইসেন্স নেওয়ার যে নির্দেশনা দিয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার, তা আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। দেশটির দুজন সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলের বিরোধিতার মুখে কেন্দ্রীয় সরকার উল্টো পথে হাঁটছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা মার খেত।

সংবাদে বলা হয়েছে, লাইসেন্স নেওয়ার নির্দেশনা এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, লাইসেন্স নেওয়ার নির্দেশনা কার্যকর হবে কি না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উল্লিখিত দুজন সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে একজন রয়টার্সকে এই কথা বলেছেন।

গত ৩ আগস্ট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎই দেশের বাজারে ‘বিশ্বস্ত হার্ডওয়্যার ও সিস্টেম’ নিশ্চিত করার কথা বলে এই লাইসেন্সের শর্ত দেয়। এ ছাড়া দেশে তৈরি কম্পিউটার ও এ–জাতীয় যন্ত্রের ব্যবসা বৃদ্ধি করাও সরকারের লক্ষ্য ছিল। চীনের ওপর আমদানিনির্ভরতা কমাতেই মূলত তারা এই ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের বিরোধিতার কারণে সেই পরিকল্পনা খুব দ্রুতই তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এবার তা এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হলো।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথেরিন টাই ভারতের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর ফলে ডেল ও এইচপির মতো কোম্পানির ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হতো।

এই পরিস্থিতিতে ভারতে ইলেকট্রনিকস পণ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী নভেম্বর থেকে সহজ আমদানি নিবন্ধনপ্রক্রিয়া চালুর প্রস্তাব দেবে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সূত্র রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

নতুন এই ‘আমদানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার’ অধীন আগের মতো লাইসেন্স নেওয়ার বিধান থাকছে না। তার বদলে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার আমদানির জন্য ‘নিবন্ধন প্রত্যয়ন’ নিতে হবে। গত শুক্রবার তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট শিল্পের কর্মকর্তাদের কাছে এই প্রস্তাব দিয়েছে।

ভারত সরকারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ভারতে ১৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৭০ কোটি ডলারের ল্যাপটপ, ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও ট্যাবলেট আমদানি করা হয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, কম্পিউটারের আমদানি কমাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত এক বছরে নানা ধরনের পরিকল্পনা করছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান সামনে রেখেই তারা এসব করছে। ভারতে তৈরি ইলেকট্রনিক যন্ত্র ও ডিভাইস রপ্তানির জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর যে ঘোষণা দিয়েছে, তার সুবিধা নিতে চাইছে ভারত। সে কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে নানা ধরনের প্রণোদনাও দিচ্ছে দেশটি।