ব্রিকসের সদস্যদেশের নেতারা। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে
রয়টার্স

ডলারের আধিপত্য প্রতিহত করার অনেক চেষ্টাই করা হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিকসের সম্প্রসারণ হয়েছে। তারাও চায়, ডলারের বিপরীতে ভিন্ন কোনো মুদ্রায় আন্তর্জাতিক লেনদেন হোক। কিন্তু নিউইয়র্কভিত্তিক ব্যাংক বিওয়াইএন মেলন মনে করছে, শিগগিরই ডলার বৈশ্বিক রিজার্ভ মুদ্রার মর্যাদা হারাচ্ছে না।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সদস্যদেশগুলো হলো ইরান, আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া ও মিসর। তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তিতে বিওয়াইএন মনে করছে, এমন একটি পণ্যসম্ভারের আবির্ভাব হতে পারে, যা সমর্থনে থাকবে স্বর্ণ ও তেল।

আরও পড়ুন

ডলারের বিকল্প হিসেবে ব্রিকসের অভিন্ন মুদ্রার কতটা সম্ভাবনা, সংকট-ই বা কী

রয়টার্স জানাচ্ছে, সম্প্রসারিত ব্রিকস জোট এখন বিশ্বের ৭৫ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ, ৫০ শতাংশ গ্রাফাইট, ২৮ শতাংশ নিকেল ও ১০ শতাংশ কপারের উৎস। সেই সঙ্গে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরান জোটের সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের তিন বৃহৎ তেল রপ্তানিকারী দেশ ব্রিকসে যুক্ত হলো। এদের নিয়ে বিশ্বের ৪২ শতাংশ জ্বালানি তেল ব্রিকস সদস্যরা সরবরাহ করবে।

তারপরও বিওয়াইএন মনে করে, ব্রিকসের এই জোট সম্প্রসারণ ডলারে আধিপত্য ভাঙার মতো যথেষ্ট নয়।

বিওয়াইএনের কৌশল বিভাগের প্রধান বব স্যাভেজ বলেন, ‘মার্কিন ডলার শিগগিরই রিজার্ভ মুদ্রার জায়গা হারাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, নতুন মুদ্রা ইউনিয়নগুলোর উচিত, স্বর্ণ বা কার্বনভিত্তিক না হয়ে প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব হওয়া।’

স্যাভেজ আরও বলেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এই জোটে আসার কারণে এই জোটের মাথাপিছু আয় ও অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে; তবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে টেকসই জ্বালানিতে স্থানান্তরিত হতে সময় লাগবে ও এমনকি দ্বন্দ্ব-সংঘাতও হতে পারে।

আরও পড়ুন

ডলার কি সত্যিই ইউয়ানের কাছে হেরে যাচ্ছে

আরও পড়ুন

কতটা সফল হয়েছে ব্রিকস

তিনি আরও মনে করেন, আগামী দশকে ডলার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে প্রযুক্তি। উচ্চপ্রযুক্তির কম্পিউটার চিপ বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ, স্মার্টফোন থেকে স্বচালিত গাড়ি সব ক্ষেত্রেই এই চিপ ব্যবহৃত হয়। এসব উচ্চপ্রযুক্তির চিপের ব্যবহার বাড়লে মার্কিন ডলারের ব্যবহারও বাড়বে। কারণ, এসব চিপের বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত হয়। এ ছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এখনো ডলারে লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

এসব কারণে বিওয়াইএন মনে করছে, মার্কিন ডলারের আধিপত্য শিগগিরই কমছে না।