এবার সাড়ে ৮৬ কোটি ডলার দান করলেন বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ ধনী

ওয়ারেন বাফেট
ছবি: রয়টার্স

আবারও বিপুল পরিমাণ শেয়ার দান করলেন ‘বিনিয়োগ–গুরু’খ্যাত ওয়ারেন বাফেট। চারটি পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানে বার্কশায়ার হাথাওয়ের ৮৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার মূল্যের শেয়ার দান করেছেন তিনি।

জীবনের সায়াহ্নে এসে এই দান করতে পেরে ভালো লাগছে বলে শেয়ারহোল্ডারদের জানিয়েছেন বাফেট। তবে এই প্রথম দান করেননি তিনি, এর আগেও অনেক অর্থ বিলিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী এই বিনিয়োগকারী। ফোর্বসের রিয়েল টাইম বিলিয়নিয়ার বা এ মুহূর্তের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ওয়ারেন বাফেটের অবস্থান পঞ্চম।

রয়টার্স জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাফেটের কোম্পানি বার্কশায়ার হাথাওয়ে জানিয়েছে, প্রয়াত প্রথম স্ত্রীর নামে গঠিত সুজান টমসন বাফেট ফাউন্ডেশনে ওয়ারেন বাফেট ১৫ লাখ বি শ্রেণির শেয়ার দান করেছেন। এ প্রতিষ্ঠান প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে।

এর বাইরে আরও ৯ লাখ বি শ্রেণির শেয়ার নিজ সন্তানদের পরিচালিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সমভাবে দান করেছেন বাফেট। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো হাওয়ার্ড জি বাফেট ফাউন্ডেশন, শেরউড ফাউন্ডেশন ও নোভো ফাউন্ডেশন।

এর আগে গত বছর ঠিক এ সময় ওয়ারেন বাফেট এসব দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ৭৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার মূল্যের শেয়ার দান করেছিলেন, সেদিন ছিল থ্যাংকসগিভিং ডের ঠিক আগের দিন।

শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশে লিখিত বিরল এক চিঠিতে বাফেট নিজের ৯০ শতাংশ সম্পদ দান করার অঙ্গীকার করেছেন। তাঁর সন্তানেরা উইল কার্যকর করার বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আরও বলেন, বার্কশায়ারের জন্ম হয়েছে দীর্ঘ সময় টিকে থাকার জন্য এবং এই কোম্পানি ভালো মানুষের হাতেই থাকবে।

বাফেট গত কয়েক বছরে বার্কশায়ারের বাইরের অনেক দায়িত্ব ছেড়ে দিলেও জনসমক্ষে তিনি কখনো পদ ছাড়ার ঘোষণা দেননি, এমনকি ২০১২ সালে প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও।

চিঠিতে বাফেট লিখেছেন, ‘৯৩ বছর বয়সেও ভালেবোধ করছি। যদিও বুঝতে পারছি, আমি এখন অতিরিক্ত ইনিংস খেলছি।’

ওয়ারেন বাফেট মনে করেন, দীর্ঘজীবনের রহস্য হলো সুখ; মানুষের দীর্ঘায়ুতে সুখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিএনবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, কোকাকোলা ও জাঙ্ক ফুড খেলে তাঁর ভালো লাগে।

বিশ্বের প্রথম ধনী ব্যক্তি হিসেবে বাফেটের সম্পদমূল্য ১২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১২ হাজার ৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। মানবসেবায় তিনি অত্যন্ত সক্রিয়। ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি নিজের সম্পদের অর্ধেকের বেশি পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে দান করেছেন, যার অর্থমূল্য ৫২ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলারের মতো।

বাফেটের বার্কশায়ার হাথাওয়ে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির জোট বা গোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কার ওমাহাতে এর অবস্থান। এ কারণে বাফেটকে অনেকে ওরাকল (দৈববাণী) অব ওমাহা নামে ডাকেন। রেল, বিমা থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতে তাদের ব্যবসা আছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করে থাকে বার্কশায়ার হাথাওয়ে।

রয়টার্সের তথ্যানুসারে, বার্কাশায়ারের হাতে মোট ৩১৮ বিলিয়ন বা ৩১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের স্টক আছে, যার অর্ধেকের মতো অ্যাপলের শেয়ার।