চীনের কাছে কৌশলগত মজুত থেকে তেল বিক্রি করবে না যুক্তরাষ্ট্র

জ্বালানি তেলছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের জন্য তহবিল জোগাতে যে আইন করা হচ্ছে, তার আওতায় দেশটির স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ বা কৌশলগত পেট্রোলিয়াম মজুত থেকে চীনের কাছে তেল বিক্রি না করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিলটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে দুই দলের মধ্যে বিভক্তি থাকলেও চীনকে ঠেকানোসহ আরও কিছু বিষয়ে তাদের মধ্যে গভীর ঐকমত্য আছে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেকটা বেড়ে গেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই কৌশলগত মজুত থেকে ১৮ কোটি ব্যারেল তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। লক্ষ্য ছিল, বাজারে অতিরিক্ত তেল ছেড়ে দিয়ে দাম কমিয়ে আনা। কিন্তু এরপরই চীনের কাছে এই মজুতের তেল বিক্রির বিষয়টি নিয়ে সে দেশে উত্তপ্ত তর্কবিতর্ক শুরু হয়।

ওই বছর এই কৌশলগত মজুত থেকে ইউনিটেক আমেরিকার কাছে ১০ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রি করা হয়। ইউনিটেক আমেরিকা মূলত চীনের সিনোপেক কোম্পানির হিউস্টন–ভিত্তিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এর আগে ২০১৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় কৌশলগত মজুত থেকে পেট্রো চায়না ইন্টারন্যাশনালের কাছে কিছু তেল বিক্রি করা হয়। কোম্পানিটি চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রো চায়না কোম্পানি লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত মজুতে এখন ৩৬ কোটি ব্যারেলের বেশি তেল মজুত আছে। কিন্তু ২০২২ সালে বিপুল পরিমাণে তেল বিক্রির কারণে এই মজুত এখন ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। ২০২২ সালে মার্কিন তেল কোম্পানিগুলো সব মিলিয়ে চীনের কাছে ৮ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রি করে।

গত বছরের জুলাই মাসে ডেমোক্রেটিক দল নিয়ন্ত্রিত সিনেটে ৮৫-১৪ ভোটে চীনের কাছে এই তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করার একটি বিল পাস হয়েছে। ডেমোক্রেটিক দলীয় সিনেটর ক্রিস মারফি তখন বলেছিলেন, এই বিল পাসের মধ্য দিয়ে একধরনের ভ্রম তৈরি হয়েছে। সেটা হলো, বিশেষ কোনো রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি না করেই এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে, কিন্তু সম্ভবত এর মধ্য দিয়ে ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি করা হয়েছে।

তহবিল জোগান-সংক্রান্ত ১ হাজার ৫০ পৃষ্ঠার বিলটিতে সরকারের ১২টি বিভাগের মধ্যে ৬টি বিভাগকে কত অর্থ দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি ৬টি বিভাগকে কত অর্থ দেওয়া হবে, তা এ মাসে শেষের দিকে ঠিক করা হবে।

আগামী শুক্রবার এই প্যাকেজ সিনেটে যাওয়ার আগে প্রতিনিধি পরিষদে এ নিয়ে ভোটাভুটি হবে। সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমার এ কথা বলেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।