পাকিস্তানে তেলের দামে রেকর্ড, প্রতি লিটার এখন ৩৩০ রুপির বেশি

পাকিস্তানে জ্বালানি তেলের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩০ রুপির বেশি। এই দাম পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মানতে গিয়ে দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানে পেট্রলের দাম বাড়ানো হয়েছে লিটারপ্রতি ২৬ দশমিক শূন্য ২ রুপি আর ডিজেল প্রতি লিটারে ১৭ দশমিক ৩৪ রুপি। পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় এই দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। নতুন দাম ঘোষণার পর পেট্রল পাম্পগুলোয় এই দুই পেট্রলজাত পণ্য ৩৩০ রুপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

ডন সংবাদপত্র ৩৩০ রুপির এই দামকে বর্ণনা করেছে এভাবে: ‘একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রতিবন্ধক, যা দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অতিক্রম করা হলো’।

গত আগস্টে পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ছিল ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক চাপ বেড়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন রয়েছে। এই সরকার আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর জ্বালানির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে চলেছে। তাই সরকার জ্বালানি পণ্যের দাম ভোক্তা পর্যায়ে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

চলতি মাসে এর আগেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে তেলের দাম ১৪ রুপি করে বাড়ায় পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ। আগস্টের ১৫ তারিখ থেকে এখনো পর্যন্ত পেট্রলের দাম ৫৮ দশমিক ৪৩ রুপি ও ডিজেলের দাম ৫৫ দশমিক ৮৩ রুপি বাড়ানো হয়েছে।

আইএমএফের সঙ্গে করা ঋণ চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে পাকিস্তান সরকার প্রতি লিটার পেট্রলের ওপর ৬০ রুপি ও ডিজেলে ৫০ রুপি বিশেষ কর ধার্য করেছে। একে পেট্রলিয়াম উন্নয়ন লেভি হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

গত জুলাইয়ে আইএমএফ আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য ১২০ কোটি ডলার ছাড় করে। এই অর্থ ৩০০ কোটি ডলারের একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির অংশ, যা আগামী ৯ মাস সময় ধরে ছাড় করা হবে। আইএমএফের এই ঋণ সহায়তার মূল্য লক্ষ্য হলো দেশটির দুর্বল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা।

কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে অধোগতি চলছে। ফলে লাগাম–ছাড়া মূল্যস্ফীতি জনসাধারণের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করেছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিদিনের খরচ চালাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে।