চীন ও ইউরোপের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বড় মতপার্থক্য
চীনা বিদ্যুৎ–চালিত গাড়ির ওপর আরোপ করা শুল্ক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন দফার আলোচনা কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আলোচনায় দুই পক্ষের মধ্যে এখনো ‘বড় ধরনের মতপার্থক্য’ রয়ে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি এই শুল্ক আরোপ করে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চীনে তৈরি ইলেকট্রিক ভেহিকেল বা ইভির ওপর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীন থেকে বিদ্যুৎ–চালিত গাড়ি আমদানিতে অতিরিক্ত এই শুল্ক দিতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য দেশ চীনা ইভি আমদানিতে এই শুল্ক কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেইজিং ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এ নিয়ে আট দফা বৈঠক করল। ব্রাসেলসে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এই আলোচনা চলছে।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে এখনো বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তী দফার আলোচনার জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের আলোচকদের বেইজিংয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
কিছু ক্ষেত্রে আলোচকেরা ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন’ করেছেন, বিবৃতিতে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে যে দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে, এমন কোনো সমাধানে অবশ্য পৌঁছানো যায়নি।
চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তবে বেইজিং যে তার অভ্যন্তরীণ শিল্পের জন্য উদারহস্তে ভর্তুকি দিচ্ছে, তা নিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। ব্রাসেলসের দাবি, এই ভর্তুকি মুক্ত প্রতিযোগিতার ধারণাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর ফলে চীনা পণ্যের দাম কম রাখা সম্ভব হচ্ছে, ফলে ইউরোপীয় প্রতিযোগীরা মার খাচ্ছে।
চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে ইইউয়ের শুল্ক আরোপের ফলে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হবে। চলতি মাসেই চীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে তৈরি ব্র্যান্ডির ওপর সাময়িকভাবে শুল্ক আরোপ করে। এর ফলে ফরাসি ব্র্যান্ডি প্রস্তুতকারকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
ব্রাসেলস একই সঙ্গে চীনে তৈরি সোলার প্যানেল ও উইন্ড টারবাইনে দেওয়া ভর্তুকির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনার সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আলোচকেরা যাতে কোনো কোম্পানির মাধ্যমে এককভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ না করেন, সে ব্যাপারে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ শনিবার সতর্ক করে দিয়েছে। এ সপ্তাহে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে লাওসে বৈঠক করছেন।
চার্লস মিশেল পরে এএফপিকে বলেন, তিনি চীনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। তিনি আশা করছেন, আগামী কিছুদিন বা সপ্তাহের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সে পর্যায়ে পৌঁছানো কঠিনই হবে।