জ্বালানির উচ্চ মূল্যে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত: বিশ্বব্যাংক

জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে দেশে দেশে জ্বালানিনির্ভর শিল্পকারখানায় উৎপাদন কমছে। বিশেষ করে গ্যাস-সংকটের কারণে সার, রাসায়নিক ও ইস্পাত কারখানাগুলোতে উৎপাদন অনেক কমেছে। কোনো কোনো কারখানা বন্ধেরও উপক্রম হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প জ্বালানির উৎসের দিকে ঝুঁকছে তারা।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি কমে যায়। তখন অন্যান্য উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু করে ইউরোপের দেশগুলো। এ কারণে বিশ্ব স্পট বাজারে গত কয়েক মাসে এলএনজির দাম অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কমোডিটি আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে তারা।

সংস্থাটি বলছে, বাড়তি দামে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে গ্যাস কিনতে পারছে না বাংলাদেশসহ অনেক দেশ। তাই এসব দেশে নিয়মিত লোডশেডিংসহ কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া গ্যাসের পাশাপাশি বেড়েছে কয়লার দামও।

অন্যদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। গত জুন মাসে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ১২০ ডলার। সেপ্টেম্বর মাসে সেই দাম কমে হয়েছে ৯০ ডলার। এতে আমদানিকারক দেশগুলোতে জ্বালানি তেলের দাম কমেনি, বরং ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার দাম কমায় দেশে দেশে জ্বালানির দাম বেড়েছে।
বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, উন্নত দেশে তেলের দাম গড়ে ৭ শতাংশ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৩ শতাংশ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি গড়ে ১৩ শতাংশ দাম বেড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় তেলের দাম বেড়েছে ৬৭ শতাংশ।

তেলের দাম নিয়ে সুখবর হয়তো আগামী বছরেও আসছে না। কারণ, বিশ্বব্যাংক তাদের পূর্বাভাসে বলেছে, আগামী বছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২ ডলার বাড়তে পারে। তবে ২০২৪ সালে দাম আবার কমবে বলে ধারণা সংস্থাটির।

এদিকে চাহিদামতো গ্যাস না পাওয়ায় দেশে দেশে বাসাবাড়ি ও শিল্প পর্যায়ে কয়লা ও তেলের মতো বিকল্প জ্বালানির উৎসের ব্যবহার বাড়ছে। এ কারণে আগামী দুই বছরে গ্যাসের চাহিদা কমতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে কয়লা ও তেলের মতো বিকল্প জ্বালানি উৎসের ব্যবহার বাড়লে তা আবার পরিবেশ বিপর্যয়ে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।