চীন থেকে ১০০ কোটি ডলারের কাজ সরিয়েছে টেরাডাইন

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকাছবি : রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর চীন ছাড়ো নীতি ফলাফল দিতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপকরণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেরাডাইন গত বছর প্রায় ১০০ কোটির ডলার মূল্যের উৎপাদন চীন থেকে সরিয়ে নিয়েছে।

চীনের সুঝৌতে টেরাডাইন কোম্পানির একটি কারখানা ছিল। সেখানে তারা সেমিকন্ডাক্টর পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপকরণ তৈরি করত। এই কারখানা অবশ্য ফ্লেক্সট্রনিকস নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়া ছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সাল থেকে চীনের সঙ্গে রীতিমতো প্রযুক্তি যুদ্ধ শুরু করে। দেশটির প্রযুক্তি খাতের রাশ টানতে এবং মার্কিন প্রযুক্তি যেন চীনের সামরিক বাহিনীর হাতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর ও এর উপকরণ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাই অনেক মার্কিন কোম্পানি এখন চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে বা অন্যান্য দেশে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছে।

২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে টেরাডাইন মার্কিন সরকারের সেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানায়। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তারা জানায়, এ নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে টেরাডাইনের উপকরণ বিক্রি যেমন কমেছে, তেমনি তার উৎপাদন ও উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

গত শুক্রবার টেরাডাইনের গ্লোবাল কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড এথিক্স বিভাগের পরিচালক ব্রায়ান আমেরো রপ্তানিবিষয়ক এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে চীন থেকে উৎপাদন কার্যক্রম সরিয়ে আনার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘চীনে আমাদের যে উৎপাদন হতো, সেই কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আমাদের জরুরি অনুমোদন নিতে হয়েছে। কিন্তু আমরা একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম, এভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, সে জন্য আমরা চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তবে এর জন্য আমাদের খুব বেশি অর্থ খরচ করতে হয়নি।’

ব্রায়ান আমেরো আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে উৎপাদন চালিয়ে নেওয়ার অনুমোদন থাকলেও অনেক সরবরাহকারী সহযোগিতা করেনি, সে জন্য সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রত্যক্ষ লক্ষ্যবস্তু টেরাডাইন না হলেও আমেরো বলেন, এ কারণে টেরাডাইন অনেকটা আক্রান্ত হয়েছে, বাজার হিস্যায় তার প্রভাব পড়েছে। তিনি এ–সংক্রান্ত সংখ্যা–উপাত্ত না দিলেও গত ১ অক্টোবর শেষ হওয়া প্রান্তিকে চীন থেকে টেরাডাইনের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ১২ শতাংশে নেমে এসেছে, আগের বছর যা ছিল ১৬ শতাংশ।