আইএমএফের শর্তে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, পাকিস্তানে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তানুযায়ী বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার দেশব্যাপী দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করেছেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা।
আইএমএফের ঋণের শর্ত হিসেবে পাকিস্তান সরকারকে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয়েছে। গত জুলাই মাসে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে (বেইলআউট) পাকিস্তানের জন্য ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ।
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, দেশটির ডানপন্থী রাজনৈতিক দল জামায়াত-ই-ইসলামী ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর আহ্বানে এ ধর্মঘট পালিত হয়। ব্যবসায়ীদের এ কর্মসূচিতে সমর্থন দেন আইনজীবীরা।
এ ধর্মঘটে করাচি, লাহোর ও পেশোয়ার শহরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে অন্যান্য শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ হয়ে যায়। সড়কে গণপরিবহন ছিল না।
করাচিতে তাজির অ্যাকশন কমিটি (টিএসি) শুক্রবার বিদ্যুতের দাম কমানো ও পেট্রলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারে সরকারকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। তাদের সতর্কবাণী, সরকার দাবি পূরণ করতে না পারলে ১০ দিনের ধর্মঘট ডাকা হবে। যদিও টিএসির আহ্বায়ক মুহাম্মদ রিজওয়ান বলেছেন, এ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।
এদিকে করাচি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কেসিসিআই) ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। যদিও সংগঠনের সভাপতি মোহম্মাদ তারিক ইউসুফ বলেছেন, বড় শিল্পগুলো এ ধর্মঘটের আওতায় পড়বে না।
ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফপিসিসিসাই) সভাপতি ইরফান ইকবাল শেখ বলেছেন, পাকিস্তান সরকার মানুষের মনের অবস্থা বুঝতে পারছে না। তাঁর মতে, চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরোতে হলে ব্যতিক্রমী চিন্তা করতে হবে।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারের এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। সম্প্রতি তিনি বলেন, বিদ্যুতের বেড়ে যাওয়া দাম বড় কোনো বিষয় নয়, তবে সরকার বিষয়টি আমলে নেবে।
শুক্রবার আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি গুরুতর কিছু নয়। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়েছে এবং সে কারণে তারা এটিকে একটি সামাজিক বিষয় হিসেবে নিয়েছে।