জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া বিপজ্জনক: ওপেক প্রধান

হাইথাম আল গাইস

বিশ্বের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেকের প্রধান হাইথাম আল গাইস। সিএনএনকে তিনি বলেন, এ শিল্পে বিনিয়োগ কমে যাওয়া বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। এ পরিস্থিতিতে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারে উঠে যেতে পারে বলে তাঁর শঙ্কা।

সম্প্রতি আবুধাবিতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পেট্রোলিয়াম প্রদর্শনী ও সম্মেলনে সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনকে হাইথাম বলেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে এ শিল্পে এখন থেকে ২০৪৫ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১২ ট্রিলিয়ন বা ১২ লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।

হাইথাম আরও বলেন, ‘এ খাতে বিনিয়োগ হ্রাস করার মধ্য দিয়ে আমরা জ্বালানির নিরাপত্তাকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। এতে দাম বাড়ার পাশাপাশি জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার গুরুতর আশঙ্কা আছে।’

হাইথাম আরও বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অর্থ হলো, বিশ্বের ভবিষ্যৎ জ্বালানি চাহিদা কেবল নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে পূরণ করা যাবে না বা হাইড্রোজেনের ওপর ভরসা করলেও চলবে না। সে জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে বলে মত দেন তিনি। তাঁর মতে, স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য হওয়ার পাশাপাশি সাধ্যের মধ্যে থাকতে হবে; হঠাৎ হঠাৎ পাওয়া যায়, এমন উৎস হলে চলবে না।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) বিশ্বব্যাপী তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার চাহিদা ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়ার এক সপ্তাহ পরই এ ধরনের মন্তব্য করেন ওপেকের প্রধান।

আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে তেল ও গ্যাস প্রকল্পে নতুন বিনিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরোল গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তির বিপুল সম্প্রসারণ সত্ত্বেও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রাক্‌-শিল্পযুগের ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনা বেশ দুঃসাধ্য কাজ।

আইইএর তথ্যানুসারে, সেই লক্ষ্য অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা বর্তমানের নিরিখে ২৫ শতাংশ কমাতে হবে।

ওপেক প্রধানের মতে, গত ৩০ বছরে বিশ্বের মোট জ্বালানি চাহিদার তুলনায় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার খুব একটা কমেনি, তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো এখনো বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেন তিনি।