লোহিত সাগরে জাহাজ চালানোর ঘোষণায় কমেছে তেলের দাম

জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সৌদি আরবছবি: রয়টার্স

লোহিত সাগর দিয়ে বিশ্বের বড় বড় জাহাজ কোম্পানি আবার জাহাজ চালানো শুরু করায় আজ বুধবার সকালে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে; যদিও এর আগের দিন তেলের দাম বেশ খানিকটা বেড়েছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যানুসারে, আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৮ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ কমে ৮০ দশমিক ৮৯ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ২২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ কমে ৭৫ দশমিক ৩৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২ শতাংশের বেশি বেড়ে চলতি মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। আগের সপ্তাহেও তেলের দাম বেড়েছিল এবং তার ধারাবাহিকতায় গতকাল দাম বেড়েছিল। গত সপ্তাহে তেলের দাম ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছিল। অংশত এর কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার কমাতে যাচ্ছে—এই আশায়। অর্থনীতির নিয়ম অনুসারে, নীতি সুদহার কমানো হলে প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে ও চাহিদা বাড়বে।

লোহিত সাগর দিয়ে বিশ্বের বড় বড় জাহাজ কোম্পানি জাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সেই সঙ্গে লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের হামলার আশঙ্কাও শেষ হয়ে যায়নি।
গতকাল ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান হারজি হালেভি সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ আরও অনেক দিন চলতে পারে। অন্যদিকে ইয়েমেনের ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে কনটেইনারবাহী একটি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে।

হুতি বিদ্রোহীদের এ হামলা সত্ত্বেও লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বহুজাতিক টাস্কফোর্স টহল শুরু করায় মায়ার্সক ও ফ্রান্সের সিএমএ সিজিএমের মতো বড় জাহাজ কোম্পানিগুলো ওই সাগরপথে আবারও জাহাজ চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। জার্মানির হাপাগ–লয়েড আজ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এত কিছু সত্ত্বেও বাজারে খবর চাউর হয়েছে যে ফেডারেল রিজার্ভ ২০২৪ সালে নীতি সুদহার কমাতে শুরু করবে। গত শুক্রবার ফেডের তথ্যে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত ভোগব্যয় সূচকের নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, নীতি সুদহার কমানো হলে বাণিজ্যিক ঋণের সুদহার কমবে এবং অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হবে। তখন তেলের চাহিদাও বাড়বে।

ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত গত সপ্তাহে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন বা ২৬ লাখ ব্যারেল কমেছে; যদিও গ্যাসোলিনের মজুত কিছুটা বেড়েছে। রয়টার্সের এক প্রাথমিক জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট এবং এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মজুতের তথ্য আজ ও কাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হওয়ার কথা। এক দিন আগেই এ তথ্য প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বড়দিনের ছুটির কারণে তা পিছিয়ে গেছে।