বিক্রি কমেছে করোনা টিকার, আয় কমছে ফাইজারের

ফাইজার টিকা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

চলতি বছর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম আয় করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজার। গত শুক্রবার কোম্পানিটি তার পুরো বছরের আয়ের পূর্বাভাস ১৩ শতাংশ কমিয়েছে। একই সঙ্গে ফাইজার বলেছে, মুনাফা কমায় চাকরি ও পরিচালন খরচ কমিয়ে দেওয়া হবে, যার আর্থিক মূল্যমান হবে প্রায় ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো গত দুই বছরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বা টিকা বিক্রি করে বিপুল পরিমাণে অর্থ আয় করেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ টিকার চাহিদা কমায় মুনাফাও কমতে শুরু করেছে তাদের। এর জেরে কোম্পানিগুলো এখন কর্মী ছাঁটাই করাসহ খরচ কমানোর নানাবিধ উপায় খুঁজছে।

ফাইজারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ ও ২০২২ সালে ফাইজার রেকর্ড পরিমাণে আয় করেছিল। গত বছর ফাইজারের আয় ১০ হাজার কোটি (১০০ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়ে যায়। কোভিড টিকার প্রথম ডোজের সফল বিক্রির পরে তারা দ্বিতীয় ও বুস্টার জোজও বিক্রি করে। কিন্তু সংক্রমণের হার কমার কারণে এখন আর প্রত্যাশা অনুসারে ফাইজারের কোভিড-১৯ টিকা ও করোনা চিকিৎসাসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না।

সর্বশেষ অনুমান অনুসারে, চলতি বছর ফাইজার ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার থেকে ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের আশা করছে। তবে এর আগে চলতি বছরের জন্য ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার থেকে ৭ হাজার কোটি ডলার আয়ের পূর্বাভাস ছিল তাদের। কোম্পানিটি জানিয়েছে, মূলত তাদের কোভিড-১৯ টিকার চাহিদা কমার কারণেই আয় কমেছে। আয় কমার পাশাপাশি নিউইয়র্ক ভিত্তিক কোম্পানিটির শেয়ারের দামও কমছে।

খরচ কমানোর কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মী ছাঁটাই করতে পারে ফাইজার। তবে কোন অঞ্চল থেকে ও কী সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করা হবে, তার বিশদ বিবরণ দেয়নি কোম্পানিটি। খরচ কমানোর মাধ্যমে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ কমপক্ষে ৩৫০ কোটি ডলার বাঁচাতে চায় তারা।

এদিকে ফাইজারের করোনা ছাড়া অন্যান্য ওষুধ পণ্যের আয় প্রত্যাশা অনুসারেই হচ্ছে। ২০২৩ সালে নন-কোভিড পণ্যে ৬ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

করোনার সময় বাংলাদেশ সরকার যে গণ টিকা কর্মসূচি শুরু করেছিল, তাতে ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাও ছিল অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশকে কয়েক লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা অনুদান হিসেবে দেয়। ফাইজার ছাড়াও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোভ্যাক, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো করোনার টিকাও বাংলাদেশে দেওয়া হয়।

ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে আমাদের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিগুলো বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকটকে নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কোভিড-১৯ টিকার প্রস্তুতের পাশাপাশি চাহিদা অনুসারে তা সরবরাহেও আমরা সক্ষম হব বলে আশা করছি।’