পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল মুদ্রা চালু করছে ভারত

ডিজিটাল মুদ্রা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

এ বছরের বাজেটে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ডিজিটাল রুপি চালুর ঘোষণা দেন। তাঁর সেই ঘোষণার পর থেকে ডিজিটাল মুদ্রার অপেক্ষায় দিন গুনতে শুরু করে ভারতের মানুষ। শুক্রবার সেই অপেক্ষা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) জানাল, শিগগিরই পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলট প্রকল্প) ‘ই-রুপি’ চালু করবে তারা।

ডিজিটাল মুদ্রা চালুর বিষয়ে একটি খসড়াপত্র প্রকাশ করেছে আরবিআই। তাদের দাবি, প্রাথমিকভাবে শুধু বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এই মুদ্রা ব্যবহার করা যাবে। তবে লক্ষ্য হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনে ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থা আরও দক্ষ ও সুরক্ষিত করে গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা প্রতিহত করা। খবর ইকোনমিক টাইমসের

নির্মলা সীতারমণ স্পষ্ট বলেছিলেন, ইন্টারনেটে ব্যবহৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি ভারতে ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে গণ্য হবে না। ওই তকমা পাবে শুধু সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি)। ভবিষ্যতে যা প্রবর্তনের দায়িত্ব রিজার্ভ ব্যাংকের। এদিন খসড়াপত্রে সেই সিবিডিসি, ভারতের ডিজিটাল টাকা বা ‘ই-রুপির’ ব্যাখ্যা দিয়েছে আরবিআই। জানিয়েছে, খসড়া আনার উদ্দেশ্য এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি। বর্তমান অর্থব্যবস্থায় চালু থাকা সাধারণ মুদ্রার বিকল্প আনা তাদের উদ্দেশ্য নয়, বরং ডিজিটাল টাকাকে সাধারণ নোটের পরিপূরক করে তোলার চেষ্টা চলছে, যাতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটি ডিজিটালব্যবস্থা প্রবর্তন করা যায়, যার সুবিধা নিতে পারবে সবাই। নিশ্চিত করা হবে এই ব্যবস্থা যেন নিরাপদ, দক্ষ ও সহজ হওয়ার পাশাপাশি খরচ সাপেক্ষ না হয়। এর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবার আওতায় আনা এবং জালিয়াতি নিয়ন্ত্রণ করাও লক্ষ্য বলে আরবিআই।

অতীতে ক্রিপ্টো নিয়ে বারবার সাবধান করেছেন আরবিআইয়ের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। তাঁরা আশঙ্কা, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, বেআইনি আর্থিক লেনদেন, মাদক কেনাবেচার মতো ঘটনায় ব্যবহার করা ছাড়াও কোনো দেশের আর্থিক ব্যবস্থার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাথাব্যথার কারণ হতে পারে এই মুদ্রা। ক্রিপ্টোকে সম্পদ তকমা দিয়ে তাতে কর বসিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এসবের ওপর আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে কথা বলেছেন নির্মলা সীতারমন। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ই-রুপি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। একাংশের দাবি, এটা ভবিষ্যতে সে দেশের আর্থিক লেনদেনব্যবস্থার নকশাই বদলে দিতে পারে।

আরবিআই বলেছে, সাধারণ মুদ্রার মতো পরিচালিত হবে ই-রুপি; কিছুটা তার পরিবর্ধিত ব্যবস্থা হিসেবে। এমনভাবে তৈরি হবে, যাতে তা প্রায় কাগুজে টাকার মতো হয়।