ভারতের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হয়ে উঠছে ভোক্তা খাত     

ভারত

ভারতের ভোক্তা খাত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হয়ে উঠছে। জনগণের আয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ ভারতে বছরে ১০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি আয় বা উপার্জন করে এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। 

বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতি ভারতে ৬ কোটি মানুষ বা ৪ শতাংশ কর্মজীবী বছরে ১০ হাজার ডলার বা এর চেয়ে বেশি পরিমাণ আয় করেন। মার্কিন ডলারে উপার্জিত এই আয় বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ লাখ টাকার মতো। অর্থাৎ ভারতে তিন বছর পর মাসে ৯২ হাজার টাকা আয় করবেন, এমন মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০ কোটি। ২০১৫ সালে দেশটিতে এ রকম মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৪০ লাখ। খবর সিএনবিসির। 

ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির মুম্বাই কার্যালয়ের অংশীদার অভিষেক মালহোত্রা সিএনবিসিকে বলেন, ভ্রমণ থেকে শুরু করে গয়না ক্রয়, বাইরে খাওয়াদাওয়া করাসহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন পণ্যসেবার জন্য খরচের প্রবণতা এবং সেই সঙ্গে পরিমাণও বাড়ছে।

ভারতীয় নাগরিকদের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁদের মধ্যে এখন স্টক মার্কেট তথা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সোনা-গয়না ও সম্পত্তি কেনার হার বাড়ছে। যেমন দেশটিতে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পত্তির দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ৫ কোটি থেকে বেড়ে ৯ কোটিতে উঠেছে এবং এই কার্ডের মাধ্যমে ব্যয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।   

জনগণের আয় বৃদ্ধির সুবাদে বিভিন্নভাবে ব্যয় ও বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ভারতের ভোক্তা খাত দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হয়ে উঠছে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, ভারত ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভোক্তাবাজার হতে চলেছে। 

আরও পড়ুন

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৩৩ শতাংশ ২০ থেকে ৩৩ বছর বয়সী বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে বিভিন্ন সংস্থা দেশটিতে নিজেদের কার্যক্রম বাড়িয়ে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ টাটা কনজিউমার প্রোডাক্টস ও স্টারবাকস করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগের কথা বলা যায়। কোম্পানি দুটি জানুয়ারিতে ঘোষণা করেছে যে ২০২৮ সালের মধ্যে তারা ভারতজুড়ে স্টোর সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজারে উন্নীত করবে। এখন ভারতের ৫৪টি শহরে টাটা-স্টারবাকস কফি চেইন প্রায় ৪০০টি স্টোর পরিচালনা করছে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক চেইনগুলোর মধ্যে টিম হরতন এবং কস্তা কফি ভারতীয় বাজারে পা রাখার চেষ্টা করছে।

ভারতীয় ভোক্তাদের আয় যে দ্রুত বাড়ছে, তার আরেকটি উদাহরণ হলো দেশটির পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। বদৌলতে গত ডিসেম্বরে হংকংকে টপকে  বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম স্টক মার্কেটে পরিণত হয়েছে ভারত।