বেড়েছে আফগানিস্তানের বাণিজ্য, আমদানি প্রবৃদ্ধি ৩৮%
২০২৪ সালের আফগানিস্তানের বাণিজ্য বেড়েছে। এর মধ্যে আমদানি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ, রপ্তানি কমেছে ৪ শতাংশ। দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশটির মোট বাণিজ্য ১২ দশমিক ৪২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলারের নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে।
শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আফগানিস্তানের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসতে শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে দেশটির অর্থনীতি। তবে পুরোপুরি স্থিতিশীল হতে এখনো অনেক দূর যেতে হবে। খবর সিনহুয়ার।
২০২৪ সালে আফগানিস্তানের মোট ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলার বাণিজ্যের মধ্যে রপ্তানি হয়েছে ১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন বা ১৮০ কোটি ডলার এবং আমদানি হয়েছে ১০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২৩ সালে দেশটির রপ্তানির মোট আর্থিক মূল্য ছিল ১৮৮ কোটি ডলার এবং আমদানি ছিল ৭ দশমিক ৭১ বা ৭৭১ কোটি ডলারের।
২০২৪ সালে বাণিজ্যঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৮৮১ কোটি ডলার। এখানে রপ্তানির হিস্যা ছিল মোট বাণিজ্যের ১৫ শতাংশ আর আমদানির ৮৫ শতাংশ।
খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আফগানিস্তানের রপ্তানি স্থিতিশীল হচ্ছে। দেশটির বেসরকারি খাত সরকারের শুল্কসহায়তা থেকে উপকৃত হচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় পাকিস্তান ও চীনে আফগানিস্তানের রপ্তানি কমেছে। বেড়েছে তুরস্ক ও ভারতে। ইরান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আফগানিস্তানের রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে।
একসময় পপি ফুল চাষ ও আফিম উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল ছিল আফগান অর্থনীতি। কিন্তু আফিম নিষিদ্ধের পর বিকল্প হিসেবে খনিজ ও রত্ন সংগ্রহের ওপর জোর দিয়েছে দেশটির তালেবান সরকার।
মার্কিন বাহিনী আফগান ছেড়েছে বছর তিনেক হলো। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে আফগানিস্তানের প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে তালেবান সরকারের তত্ত্বাবধানে।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব বলছে, শুধু আফিমই ছিল দেশটির জিডিপির ৮ শতাংশ। সরকার আফিম নিষিদ্ধ করায় কৃষকেরা প্রায় ১৫০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। চাকরি হারিয়েছেন এই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত সাড়ে চার লাখ মানুষ। তবে আফগান সরকার অর্থনীতি বহুমুখীকরণের চেষ্টা করছে।
গত আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা নেওয়ার তিন বছর পূর্ণ হয়। তখন এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তিন বছরে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দেশটির অর্থনীতি একরকম স্থবির। পাশাপাশি মানবিক সংকট দিন দিন বাড়ছে।
জাতিসংঘের হিসাবে দেশটির প্রায় ৪০ লাখ মানুষ শুধু রুটি ও চা খেয়ে বেঁচে আছে। বেকারত্ব প্রকট। আগামী তিন বছরে দেশটির কোনো প্রবৃদ্ধি হবে না বলে আশঙ্কা বিশ্বব্যাংকের।