ধসে যাওয়া ব্যাংকের নির্বাহীদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত: বাফেট

ওয়ারেন বাফেটছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে তিনটি ব্যাংক ধসে গেল, সেই ব্যাংকগুলোর নির্বাহীদের ‘শাস্তির’ আওতায় নিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট।

বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হাথাওয়ের কর্ণধার ওয়ারেন বাফেট মনে করেন, ব্যাংক বিপদে পড়লে পরিচালকদেরও ‘ভুক্তভোগী’ হওয়া উচিত। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে তিনি ব্যাংক খাতের শেয়ারের বিষয়ে সন্দিহান হয়ে উঠেছেন তিনি। এর কারণ হলো ব্যাংকগুলোর ভুল খাতে প্রণোদনা দেওয়া।

বার্কশায়ার হাথাওয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় ওয়ারেন বাফেট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও গণমাধ্যমকে একহাত নিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সিলিকন ভ্যালি, সিগনেচার ও ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক ধসের ঘটনায় এরা মানুষকে যে বার্তা দিয়েছে, তা অপ্রতুল ছিল। এদের কর্মকাণ্ডে মানুষ অযথা ভয় পেয়েছে।

বাফেট বলেন, ব্যাংক ধসে গেলে প্রধান নির্বাহী ও পরিচালকদের ‘ভুক্তভোগী’ হওয়া উচিত। তা না হলে মানুষের কাছে বার্তা যাবে যে ব্যাংক চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও শাস্তি হয় না। এটা ভালো লক্ষণ নয়। যাঁদের হাতে অর্থনীতির চাবিকাঠি, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়।

এই বাস্তবতায় বাফেট ব্যাংকের শেয়ারের বিষয়ে কিছুটা সন্দিহান। সম্প্রতি তিনি ব্যাংকের স্টক অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন। তবে তিনি পছন্দের ব্যাংক অব আমেরিকার শেয়ার ছাড়েননি।

ফার্স্ট রিপাবলিকের প্রসঙ্গে বাফেট বলেন, ব্যাংকটি বড় বড় অঙ্কের আমানতের জন্য নির্ধারিত হারে বেসরকারি খাতের গ্যারান্টিযুক্ত বন্ধক দিচ্ছিল। কিন্তু ব্যাংকের যে আকার-আকৃতি, তার তুলনায় এটি অনেক বেশি। খালি চোখেই বিষয়টি দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু শেষমেশ ব্যাংকটি ধসে না পড়া পর্যন্ত কেউ তা আমলে নিল না।

বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন বার্কশায়ার হাথাওয়ের ভাইস চেয়ারম্যান চার্লি মাঙ্গার। তিনি বাফেটের ডান হাত হিসেবে পরিচিত। তাঁর কণ্ঠেও বাফেটের উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। সভায় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, একদল ব্যাংকার ধনী হওয়ার চেষ্টা করলে শেষমেশ ভালো কিছু হয়। ব্যাংকারদের প্রকৌশলীদের মতো হওয়া উচিত, ধনী হওয়ার চেষ্টা না করে সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত তাদের।’

এদিকে সেই অনুষ্ঠানে বাফেট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে পারমাণবিক বোমা তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি এ প্রযুক্তির প্রচলন হওয়ার আগে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়ারেন বাফেটের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও শতকোটিপতি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উন্নয়নের পক্ষে কথা বলে থাকেন। সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি কী করতে পারে, বিল গেটস বাফেটকে তা দেখিয়েছিলেন। তা দেখে ওয়ারেন বাফেটের মনে শঙ্কার কালো মেঘ তৈরি হয়েছে।