চার দিনের কর্মসপ্তাহে মিলছে সাফল্য, স্থায়ী নিয়ম বানাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান

প্রতীকী ছবিছবি: সংগৃহীত

কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কিছু দেশে সপ্তাহে চার দিন কাজের ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে গিয়েছিল বিভিন্ন কোম্পানি। এটা মাত্র বছর দেড়েক আগের কথা। তবে পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে সফলতা মিলেছে। এ কারণে চার দিনের কর্মসপ্তাহের নিয়মকে স্থায়ী করেছে তাদের অনেকে। আর বাকিরাও এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। খবর সিএনএনের।

২০২২ সালের জুন মাস থেকে ডিসেম্বর—এই ছয় মাসের জন্য যুক্তরাজ্যের ৬১টি প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে চার দিন কাজের পরীক্ষামূলক নিয়মে যায়। যুক্তরাজ্যের বিপণন সংস্থা থেকে শুরু করে আর্থিক সংস্থা, শিক্ষা পরিষেবা, মাছ, চিপের দোকানসহ বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। নতুন পদ্ধতিতে ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা স্বাভাবিক নিয়মের ৮০ শতাংশ সময়ে অফিসের কাজ করেছেন। এর বিনিময়ে পূর্ণকালীন নিয়মিত বেতনও পেয়েছেন তাঁরা। তবে এ কাজের শর্ত ছিল সময় কম দিলেও কর্মীরা তাঁদের স্বাভাবিক কাজের শতভাগ লক্ষ্য পূরণ করবেন।

যুক্তরাজ্যে পরীক্ষামূলক নিয়ম চালু করাদের মধ্যে অটোনমি নামের একটি কোম্পানি সম্প্রতি এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৮৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো চার দিন কাজের নিয়ম বাস্তবায়ন করছে। অন্তত ৫১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের শেষের দিকে চার দিনের সপ্তাহকে স্থায়ী নিয়মে পরিণত করেছে।

অটোনমির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মঘণ্টা কমানোর প্রভাব কর্মীদের ও তাঁদের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জন্য অত্যন্ত উপকারী হিসেবে পাওয়া গেছে। ট্রায়াল শেষে কর্মীরা ভালো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা জানিয়েছেন; তাঁদের অফিস ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বেড়েছে এবং তাঁরা কাজের সময় আগের চেয়ে কম ক্লান্তিতে ভোগার কথা জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও সিইওরাও বলেছেন, চার দিনের সপ্তাহ তাঁদের কোম্পানিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ বিষয়ে বোস্টন কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুলিয়েট স্কোর বলেন, ট্রায়ালের এই ফলাফলগুলো নতুনত্ব বা স্বল্পমেয়াদি প্রভাবের কারণে হয়নি বরং এগুলোর প্রভাব বাস্তবভিত্তিক ও দীর্ঘস্থায়ী।

এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে চার দিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে নিরীক্ষা করা হয়েছিল। তখনো দেখা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ দিনের জায়গায় চার দিন কাজ করলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তা-ই নয়, ওই সব কোম্পানির রাজস্বও বেড়েছিল।