সামান্য বেড়েছে তেলের দাম, হামাস-ইসরায়েল সংকটে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

জ্বালানি তেল
ফাইল ছবি: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে আজ বুধবার বিশ্ববাজারে সামান্য বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হবে, এমন আশঙ্কা থেকেই দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ২৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৭ দশমিক ৯১ ডলারে উঠেছে। এ ছাড়া ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১৭ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৬ দশমিক ১৪ ডলারে ওঠে।

গত শনিবার ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গত সোমবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস থেকেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ দশমিক ৫০ ডলার বাড়ে, যদিও গতকাল মঙ্গলবার তেলের দাম কিছুটা কমে যায়।

তেলের বাজারে ইসরায়েলের ভূমিকা বড় কিছু নয়, কিন্তু বাজারের উদ্বেগের জায়গা হলো, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই আরও তীব্র হলে বাজারে তেলের সরবরাহ কমবে। বছরের বাকি সময় বাজারে ঘাটতি থাকার আশঙ্কাও রয়েছে।

আইএনজি ব্যাংকের বিশ্লেষক ওয়ারেন প্যাটারসন ও ইওয়া ম্যানথি বলেছেন, এই উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির ঝুঁকি আছে, বিশেষ করে যদি সেখানে ইরানের সম্পৃক্ততা থাকে। সেই পরিস্থিতিতে ইরানের তেলে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ২০২৪ সালে তেল সরবরাহে আবারও ঘাটতি তৈরি হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে হামাসের এই হামলায় ইরানের সম্পৃক্ততার দিকে আঙুল তুলেছে, যদিও এ বিষয়ে এখনো যুক্তিগ্রাহ্য সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এদিকে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে।

আরও কিছু কারণে বাজার সতর্ক। সেটা হলো ইসরায়েলের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র হাত বাড়িয়ে দিলে ইরাক ও ইয়েমেনের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে।

বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব গতকাল জানিয়েছে, গাজা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এই সংঘাতের মাত্রা যেন বৃদ্ধি না পায়, সে লক্ষ্যে তারা সহযোগীদের নিয়ে কাজ করছে। এ ছাড়া তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে তারা নিজেদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা আবারও বলেছে।

এদিকে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণীর জন্য আর্থিক বাজার অপেক্ষা করছে, আজ যা প্রকাশিত হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে ডলারের বিনিময়মূল্য কিছুটা কম রয়েছে। ডলারের বিনিময় হার কমলে অন্যান্য দেশের জন্য সুবিধা। এতে তাদের পক্ষে তুলনামূলকভাবে সস্তায় তেল কেনা সম্ভব হয়, তেলের চাহিদাও সে কারণে বেড়ে যায়।
সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তারা বলেছেন, ফেডের আর নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রয়োজন নেই।

তবে ইতিবাচক বিষয় হলো, ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে একটি বিদেশি কোম্পানি শর্ত সাপেক্ষে ভেনেজুয়েলার অন্তত আরও একটি তেলের খনির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে পারে। এতে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে।