অটোমেশনের কারণে সাড়ে ৮ কোটি চাকরি যাবে

সংকটে অটোমেশন প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।
ছবি: রয়টার্স

কোভিড-১৯-এর ধাক্কায় এমনিতেই অনেক চাকরি গেছে—এর মধ্যে আরেক দুঃসংবাদ হলো, এ সংকটে অটোমেশন প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। এতে আগামী পাঁচ বছরে সাড়ে আট কোটি মানুষের চাকরি যেতে পারে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড -১৯ মন্দার সঙ্গে সঙ্গে অটোমেশন শ্রমিকদের জন্য ‘দ্বিগুণ বাধা’ সৃষ্টি করছে। তারা আরও সতর্ক করে বলেছে, যা সতর্ক করে বলেছে যে, কাজ হারানো শ্রমিকদের নতুন পেশায় প্রবেশের জন্য পুনরায় প্রশিক্ষণ দেওয়া না হলে বৈষম্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডব্লিউইএফের জরিপ করা বড় কোম্পানিগুলোর দুই পঞ্চমাংশই জানিয়েছে তারা প্রযুক্তি সংহতকরণের মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষেত্র কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এই প্রথম কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেয়ে , কর্মসংস্থান শেষ হচ্ছে বেশি। যা  সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। করোনভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বেকারত্বের তীব্র গতি বাড়িয়ে তুলেছে। ইউরোপসহ বেশ কয়েকটি বড় অর্থনীতি বেকারত্বের আশঙ্কাজনক হার থামাতে প্রণোদনা সমর্থন বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব উচ্চ হার অব্যাহত থাকায় প্রণোদনা বাড়ানোর জন্য আইনপ্রণেতাদের মধ্যে দর-কষাকষি চলছে।

অনেক কাজই প্রযুক্তির সহায়তায় করা হচ্ছে
ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেকারত্বের হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে, কাজ হারানো ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মীদের পুনরায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সহায়তার পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা প্রসারিত করার তাৎপর্য বাড়ানো হচ্ছে। যাতে আগামীর কাজে তাদের লাগানো যায়।

মহামারি বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও গভীর ঝুঁকিতে ফেলছে। ভ্রমণ ও পর্যটন, আতিথেয়তা এবং খুচরাসহ যে শিল্পগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে তুলনামূলক কম বয়সী এবং নিম্ন-বেতনের শ্রমিক ও নারীরা কাজ হারিয়েছেন।
এর আগে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে জানায় যে, মহামারিটি এই বছর আয় বৈষম্য বাড়িয়ে তুলতে পারে। এবং সাড়ে ১১ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

অনলাইনে গ্রাহক সুবিধা প্রদান বেড়েছে।
ছবি: রয়টার্স

অটোমেশন হচ্ছে যেভাবে

মহামারির কারণে ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষও প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং, ই-বাণিজ্যের মতো পরিষেবাগুলোর চাহিদা ত্বরান্বিত করেছে। অনলাইনে যারা গ্রাহক সেবা দিতে পারে না তাদের চাহিদা কমছে। যে সব কর্মী ঘরে বসে কাজ করতে পারছেন না তারা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক কর্মীই সশরীরে অফিসে না গিয়ে কাজ করতে পারেন না, অনেকের ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

ডব্লিউইএফ বলছে, বর্তমান সংকটে আক্রান্তদের সমর্থন করার প্রচেষ্টা যেভাবে চালানো উচিত সেভাবে হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে শ্রম বিভাগের কারণে ২০২৫ সাল নাগাদ সাড়ে আট কোটি চাকরি হারিয়ে যেতে পারে। তবে এ সময়ে ৯ কোটি ৭০ লাখ নতুন ভূমিকা তৈরি হতে পারে।