আফগানিস্তানে পাঁচ মাসে পাঁচ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন

২০২১ সালের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এই ঘটনা দেশটির জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হয়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে থেকে গত দুই দশকে বিশেষ উন্নতি করতে পারেনি দেশটি। আর তালেবানদের ক্ষমতা দখলের পর আফগান অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। এই পাঁচ মাসে পাঁচ লাখের বেশি আফগান চাকরি হারিয়েছেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এ তথ্য জানিয়েছে।
আইএলও বলেছে, বিভিন্ন সংকটে আফগানিস্তানের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে। বিশেষ করে নারী, কৃষিশ্রমিক, সরকারি চাকরিজীবী, সামাজিক পরিষেবা ও নির্মাণশ্রমিকদের জন্য পরিস্থিতি খুবই নাজুক হয়ে উঠেছে। লাখ লাখ আফগান চাকরি হারিয়েছেন। অনেকে আবার মজুরি পাচ্ছেন না।

জাতিসংঘের শ্রম সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাখ লাখ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সময়ের সঙ্গে শ্রমবাজারে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ায় আগামী জুনের মধ্যে আরও ৭ থেকে ৯ লাখ মানুষ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন।

এদিকে আফগানিস্তানে নগদ অর্থের ঘাটতির কারণে অর্থ উত্তোলনের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চার দশকের যুদ্ধ, মারাত্মক খরা ও মহামারির নানামুখী চাপে দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে তালেবানদের ক্ষমতা দখলের পর বিদেশে থাকা দেশটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। অভিযোগ, ২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর আগে তালেবানরা আফগানিস্তানে বর্বরতা চালিয়েছে। বিশেষ করে নারীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাথাব্যথার কারণ।

আফগানিস্তানে নিযুক্ত আইএলওর জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক রামিন বেহজাদ এক বিবৃতিতে বলেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সংকটজনক। স্থিতিশীলতা ফিরে আনা বা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অবিলম্বে সহায়তা প্রয়োজন। মূল অগ্রাধিকার হলো, মানবিক চাহিদা মেটানো। তবে দীর্ঘস্থায়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার নির্ভর করবে দেশটির মানুষ ও সম্প্রদায়ের যথাযথ কর্মসংস্থান, জীবিকা ও মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির ওপর।

২০২০ সালে আফগানিস্তানের প্রতি পাঁচটি পদের মধ্যে একটি পদে নারীরা কাজ করতেন। তবে এখন কিছু এলাকায় নারীদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের জন্য শিক্ষালাভের সুযোগও সীমিত করা হয়েছে। তালেবান নেতারা বলেছেন, এ বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে সারা দেশে মেয়েদের জন্য সব বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। আইএলওর প্রতিবেদনে আফগান জনগণের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সমর্থনের আহ্বান জানানো হয়েছে।