আবার ধাক্কা আসতে পারে ভারতের অর্থনীতিতে

ছবি: রয়টার্স

ভারতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। আজ সোমবার এক দিনে আক্রান্ত পৌনে তিন লাখ। প্রতিদিনই ভেঙে যাচ্ছে আগের দিনের রেকর্ড। অনেক রাজ্যই হয় আংশিক লকডাউন, না হয় কারফিউ দিচ্ছে। আরোপ করছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ। এর জেরে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আবার সংশয় তৈরি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আবার কমাতে শুরু করেছে মূল্যায়ন ও উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ কয়েক মাস আগেই তারা প্রবৃদ্ধির উজ্জ্বল পূর্বাভাস দিয়েছিল।

আর্থিক খাতের বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগ্যান ভারতের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ শতাংশ করেছে। ইউবিএস ১১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ করেছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গেছে যে মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ যে ক্রেতা এবং বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্য আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, গতকাল রোববার সেই কথা স্বীকার করে নিল ভারতের সরকারি থিঙ্কট্যাংক নীতি আয়োগ। সেই সঙ্গে আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের আশ্বাস, প্রয়োজন হলে আবার ত্রাণ প্রকল্প এনে সাহায্য করবে কেন্দ্র।

মহামারি মোকাবিলায় নেওয়া লকডাউন পদক্ষেপের কারণে গত বছরের বেশির ভাগজুড়েই প্রায় স্তব্ধ হয়েছিল ভারতের আর্থিক কর্মকাণ্ড। যার জেরে ভারতের প্রবৃদ্ধির রেখা নিম্নমুখী হয়।

২০২০-২১ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি সংকোচনের পর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও জিডিপির হার হ্রাস পায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তার পর ধীরে ধীরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হওয়াও অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা সামান্য (০ দশমিক ৪ শতাংশ) মাথা তুলেছিল। তবে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সেই অগ্রগতিকে আবারও বেসামাল করে দিচ্ছে।

রাজীব কুমারের মতে, এটা ঠিক যে করোনা পরিস্থিতি গত কয়েক মাসের তুলনায় বেশ খারাপ। ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা করোনার নতুন নতুন স্ট্রেইন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ভারতের। পরিষেবার মতো খাতে সংক্রমণের প্রভাব তো এখন সরাসরি পড়ছেই। তার চেয়ে বড় কথা হলো, আগামী দিনে অর্থনীতির সামনে আরও অনিশ্চয়তা অপেক্ষা করে আছে, যা সামলানোর জন্য এখন থেকেই তৈরি হতে হবে ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের।

তবে তা সত্ত্বেও ভারত ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখবে বলে আশা রাজীবের। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, রিজার্ভ ব্যাংক যেমন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে, তেমনই কেন্দ্র পরিস্থিতি অনুসারে আরও ত্রাণ প্রকল্প আনতে পারে। প্রসঙ্গত, লকডাউনের পরে গত বছর ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখা থেকে শুরু করে ছোট সংস্থার ঋণ জোগানোসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছিল সরকার।

এ ছাড়া ভারত নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস হচ্ছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ১ ও ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।