আমাজন বন উজাড়ে দায় আছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের

বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড জারার একটি বিক্রয়কেন্দ্র
ছবি: সংগৃহীত

আমাজন বন উজাড়ে পরোক্ষভাবে বড় বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর দায় রয়েছে। কারণ, আমাজন বন উজাড়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে ব্র্যান্ডগুলোর ব্যবসায়িক সংযোগ আছে। সাপ্লাই চেইন রিসার্চ ফার্ম স্ট্যান্ড ডট আর্থের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।  

গত সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন তৈরিতে ৫ লাখ তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, আমাজন বন উজাড় করছে এমন শিল্পের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংযোগ রয়েছে কোচ, লুই ভুঁইতো, প্রাডা, এইচঅ্যান্ডএম, জারা, অ্যাডিডাস, নাইকি, নিউ ব্যালান্স, তেভা, ইউজিজি ও ফেন্দির মতো ব্র্যান্ডগুলোর। যেমন ৫০টির বেশি বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে ব্রাজিলের বৃহত্তম মাংস প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি জেবিএসের। জেবিএস সম্প্রতি ২০৩৫ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। তবে তাদের এই পদক্ষেপ পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো অপর্যাপ্ত বলছে।

বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড এইচঅ্যন্ডএমের একটি বিক্রয়কেন্দ্র
ছবি: সংগৃহীত

অবশ্য প্রতিবেদনে যেসব ব্র্যান্ডের নাম উঠে এসেছে তাদের অনেকগুলোই বন উজাড়ে ভূমিকা রাখছে—এমন সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে নিজেদের মুক্ত করার নীতি ঘোষণা করেছে সম্প্রতি।

প্রতিবেদনের অন্যতম গবেষক গ্রেগ হিগস বলেছেন, ‘সমীক্ষায় পাওয়া এক-তৃতীয়াংশ কোম্পানির একরকম নীতি আছে। এতে আশা করা যায় যে বন উজাড় বন্ধের ওপর প্রভাব পড়বে। তবে দেখা যাচ্ছে বন উজাড়ের হার বাড়ছে, তাই নীতিগুলোর কোনো বস্তুগত প্রভাব নেই।’

গত ২০১৯-২০ সালে দাবানল থেকে আমাজন বনকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ব্রাজিলের ভূমিকা বিশ্বনেতাদের সমালোচনার মুখে পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, গবাদিপশু শিল্প আমাজন বন উজাড়ে অন্যতম ভূমিকা রাখছে। এই শিল্প ফ্যাশন শিল্পের চামড়া সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

গবেষণার দেখা গেছে, ভোক্তাদের মানিব্যাগ, হ্যান্ডব্যাগ ও জুতা সরবরাহ অব্যাহত রাখতে, ফ্যাশন শিল্পকে ২০২৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ৪৩ কোটি গরু জবাই করতে হবে। তাদের বিশ্লেষণ বলছে, আমাজন বন উজাড়ে প্রতিটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সরাসরি যোগসূত্র আছে এমন প্রমাণ করে না, তবে পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৮৪টি কোম্পানির মধ্যে ২৩টিরই বন উজাড়ের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট নীতি আছে। তবে তারা তাদের নিজস্ব নীতিই লঙ্ঘন করছে। উদাহরণস্বরূপ ফ্যাশন হাউস লুই ভুঁইতোর কথা তুলে ধরা হয়। আমাজন বন উজাড় করে এমন কোম্পানির সঙ্গে তার সংযোগ উচ্চ ঝুঁকির সৃষ্টি করছে। অথচ সম্প্রতি ব্র্যান্ডটি ইউনেসকোর সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।