এত কিছুর মাঝেও ইতিবাচক হবে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি

মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংকিং সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে চলতি বছর ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ
ছবি: রয়টার্স

করোনার তাণ্ডবে যেখানে উন্নত বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানে ভিয়েতনামের অর্থনীতি নিয়ে বেশ ইতিবাচক বিশ্লেষকেরা। মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংকিং সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে চলতি বছর ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং আগামী বছর হবে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। রপ্তানিতে ভর করেই এই প্রবৃদ্ধি দেখবে দেশটি। ভিয়েতনাম এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অন্যদিকে ভিয়েতনামের সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, সামাজিক দূরত্বের পদক্ষেপের ফলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাচ্ছে এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ঐতিহাসিক নিচে নেমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে এসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মূলত বিনিয়োগ, খুচরা ব্যবসা ও রপ্তানি বেড়েছে। যার ফলে এই বছর প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে। এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে দুটি সংস্থা বলছে, মূল্যস্ফীতির হার দেশটিতে ৪ শতাংশের ঘরে থাকবে।

এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত দেশটির টেক্সটাইল এবং পোশাক রপ্তানি ১৮ শতাংশ কমেছে।
ছবি: রয়টার্স

এ ছাড়া গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, আগামী বছর প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। এ অর্জন সম্ভব হলে তা হবে ১৯৯৭ সালের পর সর্বোচ্চ। আসলে সস্তা শ্রমের ওপর ভর দিয়ে দেশটির রপ্তানি বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। দেশের বৃহত্তম শহর হ্যানয় এবং হোচিমিন সিটিতে প্রতি মাসে গড় শ্রমিকের জন্য খরচ পড়ে ১৯০ ডলার, যা চীনের সাংহাইতে ৩৬০ ডলার।

আর শ্রমিকের পেছনে খরচ এত কম হওয়ায় চীনকে রেখে তৈরি পোশাক, পাদুকা ও হ্যান্ডব্যাগ প্রস্তুতকারকদের আকৃষ্ট করছে ভিয়েতনাম। সেই সঙ্গে অসংখ্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ভিয়েতনামকে বৈশ্বিক সুরক্ষা দিচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে স্মার্টফোন, কনজিউমার ইলেকট্রনিকস ও কম্পিউটারের মতো প্রযুক্তিগত পণ্য রপ্তানি পোশাক এবং টেক্সটাইলের মতো ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে ছাড়িয়ে গেছে। এই ব্যবধান আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এ বছরের প্রথম আট মাসে আগের রপ্তানি বছরের ভিত্তিতে রপ্তানি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।

দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, টেক্সটাইল ও পোশাক উৎপাদন জুলাই পর্যন্ত ৭ শতাংশ বেড়েছিল। এ ছাড়া বছরের প্রথম সাত মাসে গত মাসের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ।

তবে এডিবি বলছে, আগামী বছর রপ্তানি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলতে পারে কি না, তা নির্ভর করছে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং ভ্যাকসিনের উদ্ভাবনের ওপর। কারণ ভিয়েতনাম ন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস গ্রুপের (ভিনাটেক্স) তথ্য অনুযায়ী এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত দেশটির টেক্সটাইল এবং পোশাক রপ্তানি ১৮ শতাংশ কমেছে। এবং মোট রপ্তানি কমেছে ১৬ শতাংশ।

দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, টেক্সটাইল ও পোশাক উৎপাদন জুলাই পর্যন্ত ৭ শতাংশ বেড়েছিল। এ ছাড়া বছরের প্রথম সাত মাসে গত মাসের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে কোভিডের কারণে রপ্তানি বাড়তে পারেনি।