করোনা থাকলেও মন্দা কাটিয়ে উঠছে জাপান

মন্দা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে জাপানের অর্থনীতি। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে দেশটিতে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে রেকর্ড সংকোচনের পর জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ।

এই প্রবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রপ্তানি বৃদ্ধি।

অর্থনীতিবিদেরা মনে করছিলেন জাপানের প্রবৃদ্ধি এ প্রান্তিকে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হবে। তবে তাদের সে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। তারা আশা করছেন যে, পুনরুদ্ধারের এই ধারা বছরের চূড়ান্ত প্রান্তিক পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

করোনভাইরাস মহামারি এবং বছরের শুরুতে ভোক্তা কর বৃদ্ধির মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে জাপানের অর্থনীতিতে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে জাপানের অর্থনীতি সংকুচিত হয় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা আরও বেড়ে হয় ৮ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থনীতির ভাষায় পরপর দুই প্রান্তিকে কোনো অর্থনীতি সংকুচিত হলে তা মন্দায় পড়েছে বলে মনে করা হয়।

১৯৮০ সাল থেকে সরকারি এ হিসাব করছে জাপান। তখন থেকে এর আগপর্যন্ত কখনোই পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি। এমনকি ১৯৮০ সালের পর থেকে করোনার আগপর্যন্ত বিশ্ব বেশ কয়েকটি মন্দার মুখোমুখি হয়। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও এতটা সংকোচন দেখেনি জাপান। তৃতীয় প্রান্তিকের এই বৃদ্ধিতে যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে জাপান সরকার। অর্থনীতি রক্ষা এবং করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ এই দুইয়ে ভারসাম্য রাখতে ব্যাপক আকারে কঠোর লকডাউনে যায়নি জাপান।

অর্থনীতিবিদ নাওয়া ওশিকুবো বলেন, সরকারিভাবে দেশের জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ায় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে জাপানের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসে। দেখা যাক সামনে কী হয়। আমরা আশা করছি পরবর্তী প্রান্তিকে জিডিপির প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা ধীর হয়ে গেলেও পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা যাবে।

বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় জাপানের করোনা সংক্রমণের হার বেশ কম রয়েছে। দেশটিতে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২ হাজারের মতো। তবে গত সপ্তাহে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদ সুগা সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সতর্কতা জারি করেন। তিনি জানান যে দেশীয় পর্যটন এখনই বন্ধ হবে না।

সংক্রমণ প্রতিরোধে এপ্রিলে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে জাপান। তবে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল ছিল দেশটিতে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে ও মানুষকে ঘরবন্দী থাকার কোনো কড়াকড়ি নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
ব্যাংক অব জাপান আশা করছে, ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত দেশটির অর্থনীতি সাড়ে ৫ শতাংশ সংকুচিত হবে। জুলাইতে আশঙ্কা করা হচ্ছিল এই সংকোচন হবে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ।