করোনাভাইরাস বাড়িয়ে দিচ্ছে স্বর্ণের দাম

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে ডাও জোন্স সূচক দর হারায় ১ হাজার পয়েন্ট। ছবি: রয়টার্স
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে ডাও জোন্স সূচক দর হারায় ১ হাজার পয়েন্ট। ছবি: রয়টার্স

চীনের বাইরেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে বড় ধস হয়েছে। গতকাল সোমবার বিভিন্ন পুঁজিবাজারেই সূচকের বড় পতন দেখা গেছে।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে ডাও জোন্স সূচক দর হারায় ১ হাজার পয়েন্ট। শতাংশের দিক দিয়ে যা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন। অন্য সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকটির দর কমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নাসডাক সূচকের দর কমে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

যুক্তরাজ্যের প্রধান পুঁজিবাজার লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জভিত্তিক এফটিএসই ১০০ সূচকটি লেনদেন শেষে কমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের পর এত দরপতন দেখেনি এই সূচক। সে সময় যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার সিদ্ধান্তের কারণে পুঁজিবাজারে সূচকের ধস নামে।

ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। এসব আতঙ্কে মিলান স্টক মার্কেটে সূচকের দর কমেছে ৬ শতাংশ।

একদিকে পুঁজিবাজারে দরপতন, অন্যদিকে স্বর্ণের দাম হু হু করে বাড়ছে বিশ্ববাজারে। ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে আছে স্বর্ণ। সেই সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ।

গেল বছরের শেষের দিকে চীন থেকে শুরু হয় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। দুই মাস পার হতে যাচ্ছে, এখনো এর প্রাদুর্ভাব কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে চীনে প্রায় ৭৭ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মৃত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৬০০। প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ৩০টি দেশে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তত ৭০০ মানুষ। ইতালিতে এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দেড় শ ছাড়িয়েছে। ইরানের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ভাইরাসে দেশটির ৪৩ জন আক্রান্ত, মারা গেছেন আটজন। সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক, তুরস্ক ও আফগানিস্তান ভ্রমণ ও অভিবাসনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিছুদিন ধরেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা সন্তুষ্টি মনোভাব ছিল। জানুয়ারিতে শেয়ারবাজার বেশ উত্থানে ছিল। তবে হঠাৎ করেই পরিস্থিতি ঘুরে গেল। অর্থাৎ প্রথমে বিনিয়োগকারীরা করোনাভাইরাসের বিষয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন ছিল না, তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ে তারা মূল্যায়ন করছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে একটা অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা।