কর্মক্ষেত্রে প্রতি ১০ হাজারে রোবট এখন ১১৩

জন্মদিনের কেক পরিবেশন করছে এক রোবট
ছবি: রয়টার্স

রোবট ক্রমশ কাজের জায়গা দখল করে নেবে, এই আশঙ্কা এখন অনেকটাই বাস্তব। বিশ্বব্যাপী কর্মক্ষেত্রে রোবটের জায়গা বাড়ছে। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এই প্রবণতা বেশি। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রোবটিকস জানাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী উৎপাদন খাতে ২০১৬ সালেও প্রতি ১০ হাজার কর্মরত ব্যক্তির মধ্যে রোবট ছিল ৭৪টি। আর ২০২০ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৩। রোবটের ঘনত্বের দিক থেকে আবার এগিয়ে এশিয়া। যেমন প্রতি ১০ হাজারের মধ্যে রোবট কাজ করছে ১১৮টি। ইউরোপে এই সংখ্যা ১১৪ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১০৩। এশিয়ার মধ্যে রোবটকে কাজে দেওয়ার ক্ষেত্রে চীন ছিল এগিয়ে, এবার এগিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া।

২০১৯ সালেই দক্ষিণ কোরিয়া ১০ হাজার শ্রমশক্তিপ্রতি ৮৫৫টি রোবট প্রতিস্থাপন করেছে। মূলত ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক শিল্পে এসব রোবট বেশি কাজ করছে। জাপান ও জার্মান মূলত গাড়িশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এই দুই দেশে গাড়িশিল্পে আছে প্রতি ১০ হাজারে ৩৫০টি রোবট।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালেই দক্ষিণ কোরিয়া ১০ হাজার শ্রমশক্তিপ্রতি ৮৫৫টি রোবট প্রতিস্থাপন করেছে। মূলত ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক শিল্পে এসব রোবট বেশি কাজ করছে। জাপান ও জার্মান মূলত গাড়িশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এই দুই দেশে গাড়িশিল্পে আছে প্রতি ১০ হাজারে ৩৫০টি রোবট। আর বিশ্বব্যাপী রোবট তৈরির দিক থেকে এগিয়ে জাপান। বিশ্বের অর্ধেক রোবটই সরবরাহ করে জাপান।

রোবটের ঘনত্বের দিক থেকে খানিকটা পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ২২৮টি। তবে ভবিষ্যতের জন্য বড় লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে চীন। তাদের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে রোবট ঘনত্বের দিক থেকে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে স্থান করে নেওয়া। ২০১৩ সালে চীনে প্রতি ১০ হাজারে কর্মরত রোবট ছিল ২৫টি, ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয় ৯৭, আর এখন তা ১৮৭টি।

কৃষি উৎপাদনে বিশ্বে সেরা চীন

সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি যতই বাড়ুক, কৃষিতে চীনের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। বিশ্বে চীন সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্য উৎপাদক। বিশেষ করে শস্য ও ফল উৎপাদনে চীন বিশ্বে সবার ওপরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের মোট বাদাম উৎপাদনের ৩৭ শতাংশ ও মোট চালের ২৯ শতাংশই চীনে উৎপাদিত হবে। এ ছাড়া বিশ্বের মোট উৎপাদনের ২৩ শতাংশ তুলা, ২২ শতাংশ ভুট্টা ও ১৮ শতাংশ গম হয় চীনে।

সব মিলিয়ে বাদাম, চাল ও গম উৎপাদনে চীন বিশ্বের পয়লা উৎপাদক দেশ। আর ভুট্টায় চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে, তুলায়ও দ্বিতীয়। তুলায় শীর্ষ উৎপাদক ভারত।

বিশ্বে যত মোসাম্বি, নাশপাতি ও কমলালেবু উৎপাদিত হয়, চীনেই হয় তার তিন-চতুর্থাংশ। এ ছাড়া বিশ্বের মোট পিচ ফল উৎপাদনের ৬৯ শতাংশ, ৫৪ শতাংশ আপেল ও ৪৬ শতাংশ আঙুর উৎপাদিত হয় চীনে।

রাই শর্ষে উৎপাদনেও চীন বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে (মোট উৎপাদনের ১৯ শতাংশ)। সবার ওপরে আছে কানাডা। আর বিশ্বের মোট আখরোট উৎপাদনের ৪৭ শতাংশও হয় চীনে।

ওইসিডির মতে, কোভিড-১৯-এর কারণে সবচেয়ে ক্ষতি হবে চারটি দেশের—ইতালি, ভারত, মেক্সিকো ও যুক্তরাজ্যের। এর মধ্যে ইতালির জিডিপি কমে হবে ঋণাত্মক বা (-) ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, ভারত ও মেক্সিকোর ঋণাত্মক ১০ দশমিক ২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের হবে ঋণাত্মক ১০ দশমিক ১ শতাংশ। আর সামগ্রিকভাবে ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি কমে হবে (-) ৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

কোন দেশের প্রবৃদ্ধি কত কমবে

ধনী দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) বলছে, কোভিড-১৯-এর প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

ওইসিডির মতে, কোভিড-১৯-এর কারণে সবচেয়ে ক্ষতি হবে চারটি দেশের—ইতালি, ভারত, মেক্সিকো ও যুক্তরাজ্যের। এর মধ্যে ইতালির জিডিপি কমে হবে ঋণাত্মক বা (-) ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, ভারত ও মেক্সিকোর ঋণাত্মক ১০ দশমিক ২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের হবে ঋণাত্মক ১০ দশমিক ১ শতাংশ। আর সামগ্রিকভাবে ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি কমে হবে (-) ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। আর দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সের প্রবৃদ্ধি হবে (-) ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, রাশিয়ার (-) ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, ব্রাজিলের (-) সাড়ে ৬ শতাংশ, কানাডা ও জাপানের (-) ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, জার্মানির ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রের (-) ৩ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কোরিয়ার জিডিপি কমে হবে (-) ১ শতাংশ।

বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র সুসংবাদ দিচ্ছে চীন। দেশটির প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। সূত্র: স্ট্যাটিসটা