কর্মদিবস ৫ থেকে কমিয়ে ৪ দিন করতে চায় জাপান সরকার

ছবি: রয়টার্স

কোম্পানিগুলোয় কর্মদিবস সপ্তাহে পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিন করার পক্ষে জাপান সরকার। এ বিষয়ে কোম্পানিগুলোকে উৎসাহও দিচ্ছে সরকার। সরকারের মূল্য লক্ষ্য হলো কর্মীরা যাতে কর্মক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে একটি ভারসাম্য আনতে পারেন। কর্মীরা যেন নিজেদের পরিবারের যত্ন নিতে পারেন, সেই সঙ্গে নতুন কিছুতে দক্ষতা নেওয়ার সময় পান।

সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা সরকার তার বার্ষিক অর্থনৈতিক নীতি নির্দেশিকায় ঐচ্ছিক চার দিনের কর্মদিবস অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষকেরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেছেন। দেশের শ্রমঘাটতির কারণে নতুন উদ্যোগটি ব্যাপকভাবে গৃহীত হবে কি না, তা নিয়ে শ্রম ও ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

নিয়োগকারীরা মনে করছেন, কর্মীরা যখন সপ্তাহে চার দিন কাজ করবেন, তাতে অনুপ্রাণিত হবেন। তবে উৎপাদনশীলতা এতটা বাড়বে না যে তা দিয়ে এক দিনের কাজের ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব। অন্যদিকে চাকরিজীবীরা ভয় পাচ্ছেন বেতন কমিয়ে দেওয়ার।

তবে সরকার বলছে, এটি করলে যে সুবিধা পাওয়া যাবে, তা হলো পরিবারের সদস্যদের আরও ভালোভাবে যত্ন নেওয়া সম্ভব হবে। পরিবারের সদস্যদের যত্ন নিতে পারছি না—এ কারণে চাকরি ছাড়ার প্রবণতা কমবে। পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। আরও বেশি কর্মসংস্থানে সাহায্য করবে। মূলত, করোনাভাইরাস মহামারির এই সময়ে চার দিন কাজের বিষয়টি উঠে এসেছে। কারণ, করোনার স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে ঘরবন্দী পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল।

গত এপ্রিলের শেষের দিকে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সরকারকে এ ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে নীতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এলডিপি জানায়, এর ফলে জীবন বৈচিত্র্যময় হবে এবং নতুন দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীরা তথ্যপ্রযুক্তির মতো বর্ধমান শিল্পে যাওয়ার আগ্রহ পাবেন।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) একটি জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীরা জাপানের কর্মীদের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন।

তবে জাপানের শ্রমবাজার কিছুটা অনড়। যে সময় ধরে কাজ করা হয়, তার চেয়ে উৎপাদনশীলতা কম। চাকরির স্থানান্তর কম। গত বছর শ্রম মন্ত্রণালয় চার হাজারেরও বেশি সংস্থার ওপর একটি সমীক্ষার পরিচালনা করে। এতে দেখা গেছে, ৮ দশমিক ৩ শতাংশ কোম্পানি তাদের কর্মীদের পাঁচ দিনের কর্মদিবসের মধ্যে চাইলে বেশি দিন ছুটি দেয়।