ভারতের অর্থনীতি নিয়ে আশার কথা শোনাচ্ছে না কেউ

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতি চলতি বছর সংকুচিত হবে প্রায় সব সংস্থার পূর্বাভাসেই বলা হচ্ছে।
ছবি: রয়টার্স

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতি চলতি বছর সংকুচিত হবে প্রায় সব সংস্থার পূর্বাভাসেই বলা হচ্ছে। এবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থাও (আঙ্কটাড) বলছে, কোভিডের নেতিবাচক প্রভাবে ভারতের অর্থনীতি এ বছর ৫ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হবে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলছে, আগামী বছর প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও এই সংকোচনের ফলে স্থায়ীভাবে যে আয়ের ক্ষতি হবে তা থেকে যাবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত আঙ্কটাডের ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি অব্যাহত মহামারির কারণে গভীর মন্দা দেখছে। সংস্থাটি বলছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি এই বছর আনুমানিক ৪ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হবে। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক উৎপাদন বছরের শেষ অবধি ৬ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমতে পারে।

আঙ্কটাড বলছে, ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হবে তবে ২০২১ সালে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে। ভারতের জিডিপি ২০২০ সালে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হবে, পরবর্তী বছরে ঘুরে দাঁড়াবে। প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হারে।

এদিকে কোভিড সংকট থেকে ভারতের অর্থনীতি দ্রুত মুক্তি পাচ্ছে না বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি। সংস্থাটির গ্লোবাল ম্যানেজিং পার্টনার কেভিন স্নিডার বলেন, প্রথমে ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশ হতে পারে যা দ্রুত পুনরুদ্ধারের মতো দেখা যাবে তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের আগে কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরবে না।

ইকোনমিক টাইমসের এক সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিগুলো কীভাবে পুনরুদ্ধার করবে সে সম্পর্কে নয়টি পরিস্থিতি বর্ণনা করা যায়। তবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ব অর্থনীতি যেখানে ছিল সেখানে পৌঁছাতে কমপক্ষে ২০২৩ এর তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত সময় লাগবে। এ অবস্থায় সব সম্ভাবনার করা বিবেচনা করে ভারতসহ সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এক্স আকারের হতে পারে।

এপ্রিল থেকে জুনে ভারতের অর্থনীতি ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
ছবি: রয়টার্স

এপ্রিল থেকে জুনে ভারতের অর্থনীতি ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। চলতি বছর ভারতের অর্থনীতিতে বেশ ধরনের সংকোচন হবে বলছে অনেক পূর্বাভাস। রেটিং এজেন্সি ফিচ বলছে এ বছর ভারতের অর্থনীতি সাড়ে ১০ শতাংশ সংকুচিত হবে।

ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন দ্বিতীয় প্রান্তিকের পরিসংখ্যান প্রকাশের পর বলেন আরও কমতে পারে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার। জিডিপির এই চিত্রকে ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে রাজন সামাজিক মাধ্যম লিঙ্কড ইনে তিন পৃষ্ঠার নোট লেখেন রঘুরাম রাজন। তিনি দেখিয়েছেন, যেসব দেশে করোনার সংক্রমণ আরও বেশি, তাদের চেয়েও ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। দেশটির সরকার যে ২০ লাখ কোটি রুপির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেটাও যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ রাজন।

আরও পড়ুন