গতি হারাচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার

ছবি: রয়টার্স

চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার গতি হারাচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির এই হার এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন এবং বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ও এর আগের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের চেয়ে অনেক কম।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের জিডিপিতে এর আগের প্রান্তিক এপ্রিল-জুনে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ শতাংশ। অর্থাৎ, দেশটিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বিদ্যুৎ-ঘাটতি, কোভিড, তথা করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমণের কারণে চীনের উৎপাদন কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বছরের বাকি সময়েও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন একজন বিশেষজ্ঞ।  

চীনের অর্থনীতিতে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা দেয়। বিশেষ করে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেওয়ার কারণে উৎপাদন কর্মকাণ্ডে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। অনেক রাজ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহারে রীতিমতো রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হয়। অর্থাৎ, দিনে একেকবার একেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় বিদ্যুৎ না দিয়ে অন্য আবাসিক এলাকা বা শিল্পাঞ্চলে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে শিল্পকারখানাগুলো দিনের উল্লেখযোগ্য সময় বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে সিমেন্ট, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন কমে যায়। ক্যাপিটাল ইকোনমিকস নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান ইভানস-প্রিৎচার্ড বলেন, শিল্প খাতে উৎপাদন আরও কমার লক্ষণ রয়েছে। এর ওপর বৈশ্বিক পণ্যবাজারে বিভিন্ন কাঁচামালের ঘাটতি ও মূল্যবৃদ্ধির ঘটনাও চীনা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।

একই সময়ে চীনা সরকার কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর চাপ তৈরি করে। চীনের নিজেরও ২০৬০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে।

এ ছাড়া কয়লা উত্তোলন অঞ্চল শ্যানক্সিতে প্রবল বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দেওয়ায় তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কয়লার মূল্য বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাব পড়ে বিদ্যুৎ এবং প্রকারান্তরে উৎপাদন খাতের ওপর। চীনের মোট কয়লা উৎপাদনের ৩০ শতাংশই হয় শ্যানক্সি অঞ্চলে।

সূত্র: বিবিসি